ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত অসম(Assam)। রাজ্যটিতে বন্যার কারণে লাগাতার প্রাণহানি ঘটছে। রবিবার বিভিন্ন জেলা থেকে আরও আটজন প্রাণ হারিয়েছেন। এই অবস্থায় এখনও পর্যন্ত অসমে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ৭৮ জন। বন্যার পাশাপাশি ধস ও ঝড় তাদের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮ টি জেলার ২২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। যার মধ্যে শুধুমাত্র ধুবড়ি জেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাড়ে সাত লক্ষের বেশি মানুষ, যা অসমের জেলাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ইতিমধ্যেই বন্যা দুর্গতদের সাহায্য এবং উদ্ধারের জন্য তৎপরতার সঙ্গে কাজ চালাচ্ছে প্রশাসন। বন্যা পীড়িতদের সাহায্যে রাজ্যে মোট ২৬৯ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে, যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৫৩,৬৮৯ জন মানুষ। এছাড়া আরও ৩৬১ ত্রাণ কেন্দ্রের সাহায্যে ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৫২০ জন মানুষকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য থেকে শুরু করে ওষুধ ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এএসডিএমের বুলেটিন অনুযায়ী, এবারের বন্যায় অসমের মোট ৬৮,৪৩২. ৭৫ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে।
বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে একাধিক নদী জল। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয় ধরাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদী। বেশ কয়েকটি জায়গায় এই নদীর জলস্তর বিপদসীমার অনেকটা উঁচুতে উঠে গিয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য নদীগুলি যেমন খোয়াংয়ের বুরহিডিহিং, শিবসাগরের দিখৌ, নাংলামুরাঘাটের দিসাং, নুমালিগড়ের ধানসিরি, ধারামতুলের কপিলি, বারপেটাতে বেকি, গোলকগঞ্জের সংকোশ, বিপি ঘাটের বরাক এবং করিমগঞ্জের কুশিয়ারার জল বিপদ সীমার ওপরে বইছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় প্রশাসন সহ একাধিক উদ্ধারকারী সংস্থা রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ১৭১টি নৌকা মোতায়েন করে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা ৭০ জন মানুষ ও ৪৫৯টি গবাদি পশু উদ্ধার করেছে।
অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ) জানিয়েছে, রবিবার যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ধুবড়ি এবং নলবাড়ি থেকে দুজন করে এবং কাছাড়, গোয়ালপাড়া, ধেমাজি ও শিবসাগর থেকে একটি করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবমিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসমের ২৮ টি জেলার ৩,৪৪৬টি গ্রামের ২২ লক্ষ ৭৪ হাজার ২৮৯ জন মানুষ। ধুবড়ি পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাছাড় জেলা। এই জেলায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯২৮ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এরপরেই রয়েছে বারপেটা জেলা। এখানে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩২৮ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।