জলপাইগুড়ি থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা—সর্বত্রই এখন উঠে আসছে গণপিটুনির ঘটনা। শহর থেকে গ্রামবাংলা এই ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। আর দিন দিন তা নির্মম হয়ে উঠছে। সাহস বেড়ে যাচ্ছে যারা এই কাজ করছে। আর তাই এবার এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে ঘিরে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। এই ঘটনায় তিন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। যা নিয়ে এখন আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে।তার জেরে গুরুতর জখম ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজেপি কর্মীরা গণপিটুনির অভিযোগে আটক হতেই সরগরম হয়ে উঠেছে এলাকা। তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সবং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আবু কালাম বক্স বলেন, ‘সবংয়ের ওই এলাকায় সীমান্ত রয়েছে। বিজেপির লোকজন এসে ওখানে সন্ত্রাস চালায়। সোমবার ওই সিভিক ভলান্টিয়ার তাতে বাধা দিতেই তাঁকে মারধর করা হয়। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’ পাল্টা বিজেপি নেতা শিশির কুলভির বক্তব্য, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমাদের কর্মীদের বেছে নিয়ে কেস দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় বিজেপি জড়িত নয়।’ সবং থানা সূত্রে খবর, আহত সিভিক ভলান্টিয়ারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এলাকার কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়। তারপরেই তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পরে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই সিভিক ভলান্টিয়ার বেশিরভাগ দিন রাতেই ডিউটি করেন। কড়া নজর রাখেন গোটা এলাকায়। আর রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়েই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের মিঠাপুকুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ডিউটি করার সময় সবংয়ের মিঠাপুকুর এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয়ের ৮জন যুবক এসে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বলে এখানে ডিউটি করা যাবে না। এলাকায় সব ঠিক আছে। এটারই প্রতিবাদ করেছিলেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাতেই জোটে গণপিটুনি।
গণপিটুনি শুরু হতেই চিৎকার জুড়ে দেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই চিৎকার শুনে স্থানীয় মানুষজন জড়ো হয়ে যায়। তখন তারা পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এই তিনজনই এলাকায় বিজেপির সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে সবং থানার পুলিশ। এই বিষয়ে আহত সিভিক ভলান্টিয়ার বিশ্বজিৎ জানা বলেন, ‘আমরা চারজন এখানে ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ করে সাত–আটজন যুবক আসে। তারপর আমাদেরকে ওখানে ডিউটি না করার জন্য হুঁশিয়ারি দেয়। তার প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে মারধর শুরু করে।’