মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বদর খান সুরির বিরুদ্ধে হামাসকে সমর্থন করার অভিযোগ ওঠে সম্প্রতি। এরই সঙ্গে ইজরায়েলকে সমর্থন করার জন্য নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi) সরকারকেও একসময় না ব্যঙ্গ করেছিলেন বদর। এহে ন বদরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে মার্কিন মুলুকে। এই আবহে আমেরিকা থেকে বদরকে বের করে দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে ২০ মার্চ এর মার্কিন বিচারক নির্দেশ দিলেন, বদরকে এখনই দেশছাড়া করতে পাবে না ট্রাম্প প্রশাসন(Donald Trump)। রিপোর্ট অনুযায়ী, সুরির স্ত্রী মাফাজ সালেহ প্যালেস্তিনীয়। মাফাজের বাবা আহমেদ ইউসুফ আবার হামাসের সিনিয়র রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে বদরের মুক্তির দাবিতে আদালতে সওয়াল করেছেন তাঁর আইনজীবী। বদরের আইজীবী জানিয়েছেন, লুসিয়ানার আলেকজান্দ্রিয়ায় বদরকে আটক করা হয়েছে। সেখানে তিনি অভিবাসন সংক্রান্ত মামলায় আদালতের তারিখের অপেক্ষায় আছেন। এই আবহে ১৭ মার্চ তাঁকে তাঁর বাড়ির বাইরে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও মন্তব্য করেছিলেন, ‘তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য বদরকে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করা যেতে পারে।’ এই আবহে দরের আইনজীবীর বক্তব্য, প্যালেস্তিনীয়দের অধিকারের দাবিতে আওয়াজকে বন্ধ করতে বদরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই আবহে ভার্জিনিয়ার আদালতের বিচারক প্যাট্রিশিয়া টোলিভার জাইলস জানান, আদালতের নির্দেশ ছাড়া বদরকে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করা যাবে না।
এদিকে জানা গিয়েছে, নিজের স্ত্রীর সঙ্গে ২০১১ সালে গাজায় দুজনের সাক্ষাৎ হয়েছিল বদরের। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন দু’জনে। তারপরে তিনি দিল্লিতে চলে যান। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বদর। অবশেষে নেলসন ম্যান্ডেলা সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রেজোলিউশন থেকে সংঘাত বিশ্লেষণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২০ সালের পর পিএইচডি শেষে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান সুরি। সেখানে তিনি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলওয়ালিদ সেন্টার ফর মুসলিম-ক্রিশ্চিয়ান আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে যোগ দেন।
এদিকে মাফাজ বর্তমানে স্কুল অফ ফরেন সার্ভিসের সেন্টার ফর কনটেম্পোরারি আরব স্টাডিজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করছেন। সুরি বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যাগুরুবাদ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন এবং ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে গবেষণা করছেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, যে মার্কিন আইনে সুরি গ্রেফতার হয়েছেন, তাতে নির্বাসনেরও বিধান আছে। সুরির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামাস এবং ইহুদিবিদ্বেষ প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে যে কোনও অবৈধ কার্যকলাপে সুরির জড়িত থাকার বিষয়ে তারা অবগত নয় এবং তাকে আটকের কারণ সম্পর্কেও অবহিত করা হয়নি। এই আবহে সুরির আইনজীবী হাসান আহমেদ বলেন, তাঁর মক্কেলকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। কারণ তাঁর কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের অভিযোগও আনা হয়নি।