গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বেশ কয়েকদিন দেশের নিয়ন্ত্রণ ছিল সেনার হাতে। তবে সামরিক শাসন তারা জারি করতে চায়নি। বরং একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথেই ফেরাতে চেয়েছিলেন সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। এহেন ওয়াকারের বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি দাবি করেন, মহম্মদ ইউনুসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করায় আপত্তি ছিল সেনা প্রধানের। একটি ভিডিয়ো বার্তায় আসিফ বলেন, ‘সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো ছিল। তিনি বলেছিলেন, মহম্মদ ইউনুস কেন? অন্য কেউ কেন নয়? ইউনুসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন কনভিক্টেড ব্যক্তি। কনভিক্টেড ব্যক্তি কীভাবে একটা দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন?’
আসিফের দাবি, সেনা প্রধান নাকি আরও বলেছিলেন, ‘আওয়ামি লিগ একটা লোককে একেবারেই দেখতে পারছে না এবং বাংলাদেশে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ লোক আওয়ামি লিগকে সমর্থন করে। এই ৩০-৪০ শতাংশের মানুষের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে কি একটা লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত?’ আসিফের এই ভিডিয়ো বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহ নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিলেন।
এদিকে সম্প্রতি নাকি সেননিবাসে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাসনাত আবদুল্লাদের ‘ধমক’ দেওয়া হয়েছিল। এই আবহে ২১ মার্চ ঢাকার বাংলামোটরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে কার্যত সেনাবাহিনীকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা। অপরদিকে বাংলাদেশের গণ্যঅভ্যুত্থানের অন্যতম ‘মুখ’ নাহিদ ইসলাম ইউনুসের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। প্রসঙ্গত, ইউনুস জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সরকার আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে না। আর এই নিয়েই ছাত্রনেতারা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছেন।
এর আগে গত ২০ মার্চ হাসনাত এক ফেসবুক পোস্ট করে দাবি করেন, ক্যানটনমেন্টে ডেকে নাকি তাঁদের ‘রিফাইন্ড-আওয়ামি লিগ’ ফেরানোর কথা বলা হয়েছিল। তবে হাসনাতরা সেই দাবি মানেননি। এই আবহে ২১ মার্চ বাংলাদেশ এনসিপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানেই নাহিদ বলেন, ‘সম্প্রতি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস বলেছেন যে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। আমরা তাঁর এই বক্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছি।’ নাহিদদের দাবি, নির্বাচনের সময় আওয়ামি লিগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নাহিদ বলেন, ‘জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। খুনিদের বিচারের কার্যক্রমে গতি দেখতে চাই। আওয়ামি লিগের দল মতাদর্শ ও মার্কার বিরুদ্ধে জনগণ ৩৬ জুলাই (৫ অগস্ট) রায় জানিয়ে দিয়েছে।’