২০২৪ সালের ৫ অগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আবহে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পর থেকেই বাংলাদেশিদের ভিসা পরিষেবা সীমিত করে দিয়েছে ভারত। এই আবহে বাংলাদেশিদের অনেকের মধ্যেই উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশিদের মেডিক্যাল ও জরুরি ভিসা দেওয়া হলেও তা সীমিত। এই আবহে ভিসা ইস্যুতে সম্পরতি প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে। আর ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়ে বাংলাদেশি বিদেশ উপদেষ্টা জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসাপ্রক্রিয়া কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য তাঁদের কাছে নেই।
ভারতীয় ভিসা নিয়ে তৌহিদ বলেন, ‘ভিসা জটিলতা আমরা তৈরি করিনি। ভিসা একটি সার্বভৌম অধিকার। কোনও দেশ যদি কাউকে বা কোনও গোষ্ঠীকে ভিসা না দেয়, তবে এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা যাবে না। এটি তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করব, তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের জানাবেন বা কার্যকলাপ বাড়াবেন, যাতে ভারতে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিরা ভিসা পেতে পারেন।’ প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত ১৫ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের ভিসা দিত ভারত। তবে হাসিনা পরবর্তী সময়ে মেডিক্যাল বা জরুরি ভিসা বাদে অন্য কোনও ভিসা দিচ্ছে না ভারত সরকার। এদিকে মেডিক্যাল ভিসাও সীমিত সংখ্যা ইস্যু করা হচ্ছে।
এদিকে প্রতিবছর গড়ে কতজন বাংলাদেশি ভারতে চিকিৎসা করাতে আসেন? সেই বিষয়ে কোনও তথ্য বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকের কাছে নেই বলে জানান উপদেষ্টা তৌহিদ। উল্লেখ্য, বহু বছর ধরেই ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করাতে বাংলাদেশিরা ভারতে এসে থাকেন। কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর বা চেন্নাইতে যান বহু বাংলাদেশি। তবে হাসিনা পরবর্তী সময়কালে কলকাতা বেশ কয়েকটি হাসপাতাল এবং বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বাংলাদেশ রোগীদের না দেখার ঘোষণা করেছিলেন। ইউনুসের বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষ বৃদ্ধির জেরেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলি।
এর আগে কলকাতার বাইপাসের ধারে হাসপাতালগুলির বেশ কয়েকটিতে বাংলাদেশিদের আনাগোনা ছিল নিয়মিত। কলকাতার ধর্মতলা এলাকা বা ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে গেলেই দেখা মিলত বহু বাংলাদেশির। আর শুধু চিকিৎসা নয়, বিয়ের বাজার থেকে ঘুরতে আসতেও বাংলাদেশিদের অনেকেই ভারতে আসতেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশিদের জন্য প্রায় ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু করেছিল ভারত। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ছিল মেডিক্যাল ভিসা। ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ৮ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল, যার মধ্যে মেডিক্যাল ভিসা ছিল ২ লাখ। তবে বাংলাদেশিদের অনেকেই ভ্রমণ ভিসা নিয়ে এসেও ভারতে ডাক্তার দেখান বা চিকিৎসা করান। এর আগে হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরে ভারতীয় ভিসা পেতে বাংলাদেশিদের হুড়োহুড়ির ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে শেখ হাসিনা বিদায়ের ৭ মাস হল। এই আবহে বিদেশ উপদেষ্টা ভারতীয় ভিসা ইস্যু নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন। তবে তা নিয়ে তিনি কিছু স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি।