ভারতে নাকি মুসলিমদের(Muslim) ওপর অত্য়াচার হচ্ছে। আর এই অভিযোগে ভারতের ‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা’ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিল কট্টরপন্থী ইসলামি নেতা মওলানা ইউনুস আহমেদ। তিনি বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলনের মহাসচিব। এক বিবৃতি প্রকাশ করে মওলানা বলেন, ‘ভারতের মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা দিতে হবে, তাহলেই ভারতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।’ তাঁর কথায়, ‘বিজেপি যেভাবে ধর্মকে সহিংসতার উপলক্ষ বানিয়েছে, হিন্দু ধর্মমতেও তা সিদ্ধ না। এজন্য ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের বিজেপির সহিংসতার নিন্দা করা উচিত। মুসলিমদর নিরাপত্তার বিষয়টি ভারতের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভারত স্বাধীন করতে মুসলিমদের অবদান ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। সেই ভারতে বিজেপি শাসনামলে যেভাবে মুসলিমদের নিশানা করা হয়েছে, তা কল্পনা করা যায় না।’
তাঁর অভিযোগ, ভারতে নাকি এখন আর নমাজ আদায় করতে পারেন না মুসলিমরা। মওলানার বক্তব্য, ‘সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ভারতের এই আচরণ সভ্যতার জন্যে কলঙ্কজনক।’ এরপর বাংলাদেশের ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ তুলে ধরতে তিনি বলেন, ‘হিন্দু আর মুসলমান মিলে-মিশে একটি নতুন দেশ নির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখানে হিন্দুদের উৎসবে মুসলমানরা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছে আর মুসলমানদের প্রার্থনায় হিন্দুরা সহযোগিতা করেন। এভাবেই আসলে সভ্যতা টিকে থাকে।
এদিকে ইসলামি আন্দোলনের প্রধান মুখে এই সব বললেও বাস্তবতা এর থেকে ভিন্ন। আর বাংলাদেশের পরিস্থিতির থেকে নজর ঘোরাতে ভারত নিয়ে পালটা মিথ্যাচার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। বিগত দিনে বাংলাদেশে ক্রমেই বেড়েছে মৌলবাদ। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল ‘আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র’। তবে কয়েক মাস যাওয়ার পরও সেই দেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার থামেনি। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয় সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছিল। ‘জুলাই বিল্পবের’ ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সারজিস আলম চট্টগ্রামে ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন সম্প্রতি। এই আবহে ভারতের রাস্তাতেও লোক নেমেছিল। বাংলাদেশি মৌলবাদে বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে এখানে। ভারত সরকারও একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করে ওপারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাম্প্রতিক সময়ে।