রবিবার ছুটির দিন। কারোর নজর থাকবে টিভিতে অথবা মোবাইলের পর্দায়। আর কেউ বের হবেন রামনবমীর(Ramnavami) মিছিলে। কেউ অলস সময় কাটাবেন। তবে রবিবার ৬ এপ্রিল বাংলায় একেবারে মেগা ইভেন্ট। সামনের বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে বড় কর্মসূচি। রামনবমী।
কলকাতা থেকে কোচবিহার, বীরপাড়া থেকে বীরভূম সর্বত্র রামনবমীর মিছিলের প্রস্তুতি। তবে এবার প্রশাসনও পুরোমাত্রায় তৈরি। মূলত কোথাও যাতে অশান্তি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিশ প্রশাসন। সেকারণেই নানা উদ্যোগ।
সূত্রের খবর, রবিবার ছুটির দিনেও খোলা থাকবে নবান্ন। পুলিশের কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। পুলিশ শীর্ষকর্তারা গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখবেন। রাজভবনেও খোলা হচ্ছে পিসরুম।
এদিকে একের পর এক সংগঠন রামনবমীর মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছে।
পুলিশ চূড়ান্ত প্রস্তুত। দশটি জেলা ও পুলিশ কমিশনারেট এলাকাকে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলি হল আসানসোল, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও পুলিশ কমিশনারেট। ব্যপক নজরদারি করা হবে।
শনিবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ক্যানিং স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সামগ্রিকভাবে যাবতীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি।
পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, কাল রামনবমী উৎসব আছে। যারা উদ্যোক্তা রয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ৮০-এর বেশি আবেদন এসেছে দুপুর পর্যন্ত। সেগুলি দেখা হচ্ছে। আমরা যেটা বলতে চাইছি সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। উৎসবে সেলিব্রেট করুন। কোনও লোকের কোনও অসুবিধা যাতে না হয় সেটা দেখতে হবে। মাননীয় হাইকোর্ট কলকাতা যে নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে কী কী করা যাবে না সেটা পরিষ্কারভাবে লেখা আছে। এটা সবাইকে বলেছি মাননীয় হাইকোর্ট যে নির্দেশিকা দিয়েছে, কী করতে পারবেন আর কী করা উচিত হবে না সেটা বলা আছে। আশা করছি উদ্যোক্তারা বিষয়টি বুঝে পদক্ষেপ নেবেন। একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যাতে উৎসব হয় সেটা দেখতে হবে।
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, সমস্ত সিনিয়র অফিসাররা থাকবেন। ডিসি লেভেলের উপরে ৪০-৫০জন অফিসার থাকবেন। প্রচুর ফোর্স থাকবে। সমস্ত স্তরে মিটিং হয়েছে।
অস্ত্র হাতে কি মিছিল করা যাবে, হলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
এনিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, অস্ত্র হাতে মিছিল করা যাবে নাকি করা যাবে না সেটা মাননীয় হাইকোর্ট পরিষ্কার বলেছে। এটা নিয়ে আমি কিছু বলব না। যদি কেউ লঙ্ঘন করেন, না মানেন, আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেব।
বাইক মিছিল কি করা যাবে?
সেই প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কমিশনার বলেন ভেহিকেল নিয়ে কী করা যাবে সেটা হাইকোর্টের নির্দেশ বলা আছে কী ধরনের গাড়ি যাবে সেটা উল্লেখ করা আছে। এর বাইরে আমরা কিছু অ্যালাও করছি না।
এদিকে একাধিক সংগঠন বড় আকারের রামনবমীর মিছিলের আয়োজন করবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,‘পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে রাম নবমী উৎসবকে ব্যাহত করার চক্রান্ত করছে এবং উৎসবের আয়োজনের সঙ্গে জড়িত হিন্দু সংগঠকদের বেছে বেছে হয়রান করছে কিন্তু আসল দুর্বৃত্তদের খোলা ছেড়ে রেখেছে, যারা আগামীকাল আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।’
এদিকে তৃণমূলের নেতা নেত্রীরাও চুঁচুড়া, জলপাইগুড়ি সহ কয়েকটি জায়গায় রামনবমীর অনুষ্ঠান করবেন বলে খবর। তবে সেটা ঠিক দলের ব্যানারে হবে না। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে নিয়ে করা হবে। তবে মোটের উপর রবিবার কার্যত পুলিশ প্রশাসনের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। তবে শান্তি রক্ষায় তৈরি রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। মিছিলের জন্য কিছু জায়গায় ট্রাফিকের সমস্যা হতে পারে।