৩০ বছরের বৈবাহিক জীবন। কিন্তু, সন্তান সুখ থেকে বঞ্চিত রয়েছে কলকাতার কাশীপুরের এক দম্পতি। এই অবস্থায় আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান সুখ পেতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু, নিয়মের জটিলতায় সন্তান পাওয়ার শেষ রাস্তাটিও তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তাই সন্তান পেতে শেষে পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই দম্পতি। তাদের আবেদন উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।
জানা গিয়েছে, দম্পতির বিয়ে হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তারপর থেকেই তারা সন্তানহীন রয়েছে। এই অবস্থায় আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে তারা সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পিএইচএস ফার্টিলিটি ক্লিনিকে দম্পতি আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। পরে গত জুন মাসে ওই ক্লিনিকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় এটা সম্ভব নয়। কারণ বয়সের কারণে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়নি। সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী, আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দিতে গেলে সে ক্ষেত্রে বাবার বয়স হওয়া প্রয়োজন ২১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে এবং মায়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৫০ বছর হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু, ওই দম্পতির ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স ৫৮ বছর, অর্থাৎ নির্ধারিত বয়সের থেকে তিন বছর বেশি। ফলে বয়সের জটিলতায় স্বাস্থ্য ভবনের তরফে দম্পতিকে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জানা যাচ্ছে, এই বয়সে সাধারণত সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। সেই কারণে এক্ষেত্রে সন্তান নেওয়ার বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোনও উপায় না দেখে ওই দম্পতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। মামলাটি ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে।
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে দম্পতির আইনজীবী এ বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার জন্য বিচারপতির কাছে আবেদন জানান। পুরো বিষয়টি শোনার পর বিচারপতি অমৃতা সিংহ দম্পতি আইনজীবীর কাছে জানতে চান যে তারা সন্তান লালন-পালনে সক্ষম কিনা। সন্তান মানুষ করার জন্য তাদের কি পরিকল্পনা রয়েছে? এই সমস্ত বিষয়ে তিনি জানতে চান। উত্তরে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, সন্তান লালন পালনের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসছেন। তাদের পুরো পরিকল্পনা রয়েছে, তারা এর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আর্থিকভাবেও তারা সক্ষম। আইনজীবী জানান, দম্পতির ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স বেশি হলেও সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি। ওই দিন পরবর্তী নির্দেশ দিতে পারেন বিচারপতি।