বয়সের ভার, শারীরিক অসুস্থতা, দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ না করে স্রেফ হাজতে পুরে রাখা, কিংবা অভিযুক্ত বাকিদের জামিন মঞ্জুর – পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় এর মধ্যে কোনও যুক্তিই ধোপে টিকল না। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের আবেদন ফের একবার খারিজ হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, এর আগেও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় পার্থর জামিনের আবেদন যেমন খারিজ হয়েছে, আবার মঞ্জুরও হয়েছে। যেমন – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডি-র মামলায় আগেই জামিন পেয়েছেন পার্থ। কিন্তু, আজ (বৃহস্পতিবার – ১৭ এপ্রিল,২০২৫) এই একই ঘটনায় সিবিআই-এর করা মামলায় পার্থ চট্টোপবাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ এপ্রিল এই মামলার রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু, সেদিন বিচারক অনুপস্থিত থাকায় মামলার পরবর্তী দিন ঘোষণা করা হয় ১৭ এপ্রিল। সেই মতো আজ বিচার ভবনের মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হয় এবং বিচারক সাফ জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে পার্থকে জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।
পার্থকে জামিন না দেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন বিচারক। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ‘চার্জশিট এবং যাবতীয় তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এটা স্পষ্ট যে, নিয়োগ মামলায় সরাসরি যোগ রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের।’ তাছাড়া, আত্মপক্ষ সমর্থনে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে যে যে যুক্তি পেশ করা হয়েছে, তাও যথেষ্ট সন্তোষজনক নয়। এমনকী, সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে – পার্থকে দুর্নীতির অন্যতম ‘মাথা’ বলেও চিহ্নিত করেছে আদালত!
বিচারকের আরও পর্যবেক্ষণ হল – তদন্ত এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায়ে রয়েছে। এখন যদি পার্থকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়াটিই প্রভাবিত ও ব্যাহত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই জামিন মামলাটির শুনানি শেষ হয়েছিল গত ৩ এপ্রিল। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামীর বক্তব্য হল – বয়সে প্রবীণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে। তাঁকে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রাখা হচ্ছে। অথচ, নতুন করে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ বা জেরা করা হচ্ছে না।
এদিকে, এই একই মামলায় অভিযুক্ত বাকিদের একে একে জামিন হয়ে যাচ্ছে। তাহলে পার্থ কেন জামিন পাবেন না? কিন্তু, আদালত এই যুক্তি গ্রাহ্য করেনি। ফলত, আপাতত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলমুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।