মেদিনীপুর মেডিক্যালে সংক্রমিত স্যালাইনে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পরেও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যালসের স্যালাইনকে ক্লিনচিট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্যালাইনে কোনও সমস্যা ছিল না বলে যাবতীয় দায় চিকিৎসকদের ঘাড়ে চাপিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী আদালতেও তারা জানিয়েছে স্যালাইনে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির রিপোর্ট বলছে অন্য তথ্য। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যালসের ১৬টি ব্যাচের স্যালাইন পরীক্ষায় ফেল করেছে। যার ফলে রাজ্য সরকারের দাবি নিয়ে ফের উঠেছে প্রশ্ন।
দেশের বিভিন্ন ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম মিলিয়ে মোট ৯৩টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যালসের ১৬টি ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহারের অযোগ্য বলে চিহ্নিত হয়েছে। রিঙ্গার ল্যাকটেট ও অন্য স্যালাইনও রয়েছে তার মধ্যে। এই স্যালাইনগুলিতে সংক্রমণ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। এ ছাড়াও বিভিন্ন নামি সংস্থার বেশ কয়েকটি ওষুধ এই তালিকায় রয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতিমৃত্যু নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় মমতা বলেন,হাসপাতালে সরবরাহের আগে স্যালাইনগুলির মান অত্যন্ত ভাল ভাবে যাচাই করা হয়। কোনও সংস্থার ওষুধ কেনার পরে প্রতিটি ‘ব্যাচ’ থেকে স্যালাইন বা ওষুধের নমুনা দু’টি পৃথক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়। দু’টি জায়গা থেকেই যথাযথ শংসাপত্র পেলে তবেই সেগুলি পাঠানো হয় হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ল্যাবরেটরির থেকে পাঠানো শংসাপত্র দেখে ওই স্যালাইন বা ওষুধ গ্রহণ করেন। রোগীর শরীরে প্রয়োগের আগে তা আবার পরীক্ষা হয়। দ্বিতীয় বারও রিপোর্ট সঠিক এলে তবেই সেই ওষুধ বা স্যালাইন ব্যবহার হয়।’
এর পর তিনি বলেন, ‘মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ মিশ্রণ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটিও একই ভাবে হয়েছে। ল্যাবরেটরিতে ওষুধ পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ওষুধের গুণমানে কোনও গলদ ছিল না।’ সঠিক মানের স্যালাইনই মেদিনীপুর মেডিক্যালে সরবরাহ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন মমতা।
বলে রাখি, সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি যে সমস্ত ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে তার কোনওটি মেদিনীপুরে মেডিক্যালে প্রসূতিদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল কি না তা এখনও জানা যায়নি।