উত্তর চিনে আছড়ে পড়ল ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়। যার তাণ্ডবে বেজিংসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত টাইফুনের মতো শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থাকতে পারে বলে প্রশাসনের তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যদিও উত্তর চিনে এই ঝড় প্রথম নয়, তবে এক দশকের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে শক্তিশালী বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের গতি এতটাই বেশি যে কোনও মানুষের ওজন ৫০ কেজির নিচে হলে অতি সহজেই এই ঝড়ে উড়ে যেতে পারেন। এই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করে নাগরিকদের ঘরের ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেজিং, তিয়ানজিন এবং হেবেই প্রদেশের বিভিন্ন শহর জুড়ে তাণ্ডব চালাতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। সতর্কতা হিসেবে চিন সরকার লক্ষ লক্ষ নাগরিককে ঘরের ভিতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়াও, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বাইরের সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পার্ক এবং জনবহুল জায়গা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গোলিয়া থেকে বয়ে আসছে এই ঠান্ডা ঘূর্ণিঝড়। যার সবোর্চ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার। আবহাওয়াবিদরা এই ঘূর্ণিঝড়কে ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র গতির ঘূর্ণিঝড় বলে দাবি করছেন। এই অবস্থায় ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বেজিংয়ে কমলা সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
এর পাশাপাশি ঘুর্ণিঝড়ের ফলে তাপমাত্রা একধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মাত্র একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যাবে। আবহাওয়াবিদরা আরও জানিয়েছেন, তীব্র গতির এই ঘূর্ণিঝড় অনেকক্ষণ ধরেই স্থায়ী থাকবে। বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে। গতিবেগ অনুযায়ী চিনে ১৭টি স্তরে ঝড় মাপা হয়ে থাকে। সপ্তাহের শেষে যে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে সেটি ১১ থেকে ১৩ স্তরের মধ্যে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের। যা ধ্বংসাত্মক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্কুল, শিক্ষা বন্ধের পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে, ট্রেন পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে, গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মানুষকে পাহাড়ি বা বনাঞ্চল থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। এমনকী এই সপ্তাহের শেষের দিকে বিশ্বের প্রথম হিউম্যানয়েড রোবট হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেটি আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।