চিন্ময় প্রভুকে অবিলম্বে মুক্তি না দেওয়া হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিল বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)। শুক্রবার সনাতন পার্টির তরফে অভিযোগ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে নির্যাতন চলছে। তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। বিচার করা হচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থানের পরে যখন হিন্দুরা রুখে দাঁড়ান, তখন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে ফাঁসানো হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। আর সেই পরিস্থিতিতে সন্ন্যাসীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে বলে দাবি তুলেছে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি।
১৯৪৭ সাল থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুরা অত্যাচারিত হচ্ছে, উঠল অভিযোগ
তবে শুধু মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে নয়, বাংলাদশে দীর্ঘদিন ধরেই সনাতন ধর্মের মানুষরা অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সনাতন পার্টির কর্মী সম্মেলনের মঞ্চ থেকে অধ্যাপক অশোক তরু অভিযোগ করেছেন যে ১৯৪৭ সাল থেকেই হিন্দু ধর্মের মানুষরা নিপীড়িত হয়ে আসছেন। হিন্দুদের বাড়ি এবং মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। করা হয়েছে লুটপাট।
হিন্দু রুখে দাঁড়ানোর পরেই চিন্ময় প্রভুকে গ্রেফতার, উঠল অভিযোগ
সেইসঙ্গে মিথ্যা অভিযোগে সনাতন ধর্মের মানুষদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন অধ্যাপক। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, অধ্যাপক দাবি করেছেন যে বাংলাদেশে যখন গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তারপর হিন্দুরা বিভিন্ন অপচেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক।
একইসুরে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমনকুমার রায় অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে আসলে হিন্দু ধর্মের মানুষের কোনও প্রকৃত বন্ধু নেই। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন যে সনাতন ধর্মের মানুষদের নেহাতই ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিকার হতে হচ্ছে বৈষম্যের।
আরও সুর চড়িয়ে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি আশিসকুমার দাস আহ্বান জানিয়েছেন, যত অত্যাচার চালানো হোক না কেন, একজন হিন্দুও যেন বাংলাদেশ ছেড়ে না চলে যান। বাপ-দাদাদের মাটি ছেড়ে যাবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সভাপতি। তিনি দাবি করেছেন, হিন্দুদের ২৬ লাখ একর জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ভিন্নধর্মের উপাসনাস্থল গড়ে তোলা হচ্ছে।
আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে
সেই পরিস্থিতিতে এবার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সনাতন পার্টির তরফে জানানো হয়েছ, চিন্ময় প্রভুকে অবিলম্বে মুক্তির পাশাপাশি সরকারকে আরও সাতটি দাবি মেনে নিতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে সেইসব দাবি। না হলে ভবিষ্যতে বড়সড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়ছে। যা পরবর্তীতে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি।
আর চিন্ময় প্রভু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জেলে বন্দী হয়ে আছেন। ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গ্রেফতার করা হয়েছিল সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রকে। রুজু করা হয় দেশদ্রোহিতার মামলা।