কারও কাছে ১ লক্ষ, কারও কাছে ১.৫ লক্ষ, আবার কারও কাছে ২ লক্ষ – এভাবেই নাকি একাধিক মহিলার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার(Civic Volenteer) সন্তু দেবনাথ। দাবি করা হচ্ছে, ধারের অঙ্কটা সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ। অভিযোগ, সেই টাকা ফেরত চাইতে গিয়েই সন্তুর হাতে আক্রান্ত হন তাঁকে ধার দেওয়া মহিলারা। এমনকী, তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়িও তাঁদের উপর হামলা করেন বলে অভিযোগ। পানিহাটির এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত সন্তু দেবনাথকে গ্রেফতার করেছে খড়দা থানার পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে টিভি নাইন বাংলা-এর অনলাইন সংস্করণে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সন্তু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ করা হয়েছে। এক অভিযোকারিণীকে উদ্ধৃত করে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘টাকা চাইতে গেলে আমাকে হুমকি দিয়েছে। বাচ্চাকে তুলে নেওয়ার কথা বলেছে। বাজে বাজে কথা বলেছে। দরজার পিছন থেকে ওর শাশুড়ি আমাকে বঁটি নিয়ে রীতিমতো কোপাতে আসে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ার আমাকে শেষে এমনভাবে মারে যে আমি স্পটেই অজ্ঞান হয়ে যাই।’
খুব স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনা সামনে আসায় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। শোনা যাচ্ছে, এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও চর্চা শুরু হয়েছে। সন্তুকে যে মহিলারা টাকা ধার দিয়েছেন বলে দাবি করছেন, তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্তুর নাকি বিরাট দাপট। টাকা ধার নেওয়ার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও সন্তু সেই টাকা ওই মহিলাদের শোধ করেননি। সেই কারণেই তাঁরা সকলে মিলে সন্তুর কাছে টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
কিন্তু, সন্তু নাকি সেই সময় মত্ত ছিলেন। টাকা চাওয়া নিয়ে বচসা শুরু হতেই প্রথমে সন্তুর স্ত্রী ঋণদাতাদের উপর আক্রমণ করেন। সন্তুর শাশুড়ি বঁটি নিয়ে তেড়ে আসেন। তারপর সন্তু নিজে মহিলাদের হেনস্থা করেন। পুলিশের কাছে যে লাঠি থাকে, সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ার সুবাদে সন্তুর কাছেও সেই লাঠি ছিল বলে জানিয়েছেন আক্রান্তরা। তাঁদের অভিযোগ, সন্তু সেই ‘পুলিশের লাঠি দিয়েই’ তাঁদের মারধর করেন।
এ নিয়ে আরও এক মহিলা দাবি করেছেন, ‘আমরা শুধু টাকা চাইতে গিয়েছিলাম। আমাদের সবার থেকে মোট ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছিল। কিন্তু, টাকা চাইতে গিয়ে মার খেতে হয়। মোট ছ’জনকে মেরেছে। লাঠিচার্জ করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
এই ঘটনার পর সন্তুর বিরুদ্ধে স্থানীয় খড়দা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পাশাপাশি, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২১ মার্চ, ২০২৫) রাতেই সন্তুকে গ্রেফতার করা হয়।