CM versus Governor। মমতার অনুরোধ উপেক্ষা করে মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন বোস

Spread the love

মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে আবারও একবার কি সংঘাতে ফিরতে চলেছে নবান্ন ও রাজভবন? এখনও পর্যন্ত ঘটনাক্রম যত দূর এগিয়েছে, তাতে তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে অনুমান করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, রাজ্যের প্রশাসিক প্রধান – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অনুরোধ’ উপেক্ষা করেই মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাচ্ছেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান – রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস(Cv Anand Bose)।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের জেরে মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে কয়েকশো মানুষ নিজেদের ভিটে মাটি ছেড়ে আশ্রয় নেন পাশের জেলা মালদায়। আজ (বৃহস্পতিবার – ১৭ এপ্রিল, ২০২৫) তেমনই কয়েকজন ঘরছাড়াকে নিয়ে রাজভবনে এসে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

সেই সাক্ষাতের পর সুকান্ত সর্বপ্রথম সংবাদমাধ্যমকে জানান, আক্রান্তদের সঙ্গে রাজ্যপাল কথা বলেছেন। এবং তাঁদের দাবি মেনেই তিনি আগামিকাল (শুক্রবার – ১৮ এপ্রিল, ২০২৫) মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের একটি সূত্র বলছে, খুব সম্ভবত আজ – বৃহস্পতিবার রাতেই মুর্শিদাবাদ জেলায় পৌঁছে যাবেন রাজ্যপাল। সার্কিট হাউসে রাত কাটিয়ে আগামিকাল সকাল থেকে এলাকা পরিদর্শনে বের হবেন।

এদিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তা পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে হবে। এবং তার জন্য আপতত বাইরে কারও সেখানে যাওয়া উচিত নয়। কিছুটা অপেক্ষা করা দরকার। যে কারণে তিনি নিজেও এখনই মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন না। পরে সময় হলে যাবেন!

রাজ্যপালের উদ্দেশে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে যান।’ সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমি রিকোয়েস্ট করব, বাইরে থেকে এখন কেউ যাবেন না। আমিও তো যেতে পারতাম। যাইনি। আমি গেলে অন্যরাও যেতে চাইবেন। আমাদের (রাজ্য) মহিলা কমিশনের টিমও যেতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছি, এখনই যেতে হবে না।… ওখানে শান্তির বাতাবরণ ফিরে এসেছে। এখন কাজ কনফিডেন্স বিল্ডিং (আস্থা তৈরি করা)। সেই কাজ চলছে।… আমিও তো যেতে পারতাম, যাচ্ছি না কেন? কারণ আছে। আমি ঠিক সময়ে যাব।’

যদিও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ রাখেননি। পালটা তিনি জানান, আক্রান্তরা তাঁর কাছে এসে এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করতে বলছেন। তাই ঘটনাস্থলে গিয়েই গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এবং তার ভিত্তিতেই তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেবেন।

রাজ্যপাল বলেন, ‘মুর্শিদাবাদের ভুক্তভোগীরা, বিশেষ করে মহিলারা, তাঁরা এসেছিলেন এবং আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা অনেক কথা বলেন। যা অবশ্য ভীষণ হৃদয় বিদারক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজে সবটা খতিয়ে দেখব। সত্যিটা আসলে ঠিক কী? এবং তারপরই আমার পক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ করা সম্ভব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব।’

মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য প্রশাসনের ‘অনুরোধ’ প্রসঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য হল , ‘শান্তি যদি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে আমি খুবই খুশি হব। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে একবার যদি নিশ্চিত হতে পারি, তাহলে সেই অনুসারেই আমার রিপোর্ট তৈরি করতে পারব।… এলাকার মানুষ অনুরোধ করেছেন সেখানে যাতে বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করা হয়। এটা সর্বোচ্চস্তরে খতিয়ে দেখা দরকার।’ এদিকে, শুক্রবারই জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও মুর্শিদাবাদে আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *