এবার হাত শিবির সংবিধান সংশোধনের দাবি তুলল। ফের একবার সংরক্ষণ ইস্যুতে সরব কংগ্রেস। দেশে সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা যাতে ৫০ শতাংশের বেশি করা হয়, তার জন্যে সংবিধান সংশোধনের দাবি করেছেন শতাব্দী প্রাচীন দল। একদিন আগেই জেডিইউ-র জাতীয় কর্মসমিতিতে সংরক্ষণ সংক্রান্ত রেজোলিউশন পাশ করা হয়। সেখানে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডিইউ(Jdu) দাবি করেছে, বিহারের অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ সংরক্ষণকে বৈধতা দিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আইন আনতে বলবে তারা। আর জেডিইউ-র এই রেজোলিউশন পাশ হওয়ার পরই সংরক্ষণ ইস্যুতে সুর চড়াল কংগ্রেস।
বিহার সরকার গত নভেম্বরে ১৫ শতাংশ সংরক্ষণ বৃদ্ধির ফলে সেই রাজ্যো মোট সংরক্ষণ ৭৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। ৬৫ শতাংশ জাতিগত সংরক্ষণের পাশাপাশি জেনারেল ক্যাটাগরিতে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা প্রার্থীদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণও বহাল ছিল। এই আবহে সংরক্ষণ সংক্রান্ত নোটিশ জারির পরই পটনা হাই কোর্টে এই নির্দেশিকার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জাবিয়ে ১০টি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। পটনা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জাস্টিস কে বিনোদ চন্দ্রন এবং জাস্টিস হরিষ কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানি শেষ হয় গত মার্চ মাসে। আর জুন মাসে সেই মামলার রায়দান করে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিহার সরকারের কার্যকর করা সংরক্ষণ নীতি অসাংবিধানিক।
এর আগে লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে বিজেপি সংরক্ষণ তুলে দেবে। আবার বিজেপি দাবি করেছিল, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে দলিতদের সংরক্ষণ তুলে দিয়ে সেখানে মুসলিমদের সুযোগ দেওয়া হবে। এরই মাঝে আবার সংরক্ষণ ইস্যুতে বিজেপির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছে কংগ্রেস। আর এই ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বিজেপির জোটসঙ্গীর রেজোলিউশন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করার বিল পাশ করানো হয়েছিল বিহার বিধানসভায়। এরপরই এর বিরোধিতায় মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই মামলায় জুন মাসে রায় দেয় পটনা উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। বিহারে তফসিলি, আদিবাসী এবং ওবিসিদের জন্য রাজ্য সরকারের নয়া সংরক্ষণ কোটা বাতিল করে পটনা হাই কোর্ট স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, সংরক্ষণের কোটা ৫০ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না বলে আগেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে বিহারে জাতিভিত্তিক জনণনা করার পরে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল সেই রাজ্যের বিধানসভায়। কারণ এর আগে জাতি গণনায় জানা গিয়েছিল, বাংলার প্রতিবেশী রাজ্যের ৬৫ শতাংশ মানুষ আর্থিকভাবে পিছিয়ে আছেন। এই আবহে রাজ্যের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূর করতে আরও অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ জাতিভিত্তিক সংরক্ষণ আনা হয়েছিল সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে। অবশ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া সেই সংরক্ষণ বিলকে বাতিল করে হাই কোর্ট। এই আবহে আগামী বছরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাপে নীতীশ কুমার।