দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির যোগাযোগব্যবস্থা যাতে আরও উন্নত হয়, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে মেঘালয় সরকার। তবে, এক্ষেত্রে তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশকেও জুড়ে দিতে চাইছে। হ্যাঁ। মেঘালয় সরকারের প্রস্তাব হল, বাংলাদেশকে ভায়া করে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশে যাতায়াতের জন্য করিডর তৈরি করা হোক।
বলা হচ্ছে, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ অন্তর্দেশীয় অর্থনৈতিক করিডরের মাধ্যমে এই প্রস্তাব কার্যকর করা সম্ভব। প্রসঙ্গত, হিলি হল পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি সীমান্ত (ভারত-বাংলাদেশ) এলাকা। অন্যদিকে, মহেন্দ্রগঞ্জও হল একটি সীমান্তবর্তী শহর। যা মেঘালয়ের গারো পার্বত্য অঞ্চলের অংশ। এই সীমান্তটিও স্থলভাগে ভারত ও বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে যুক্ত বা বিভাজিত করেছে।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এই প্রসঙ্গে বলেন, এই রুটে করিডর চালু করা হলে তার দূরত্ব হবে মোটামুটি ১০০ কিলোমিটারের মতো। এবং এই রুটে যাতায়াত শুরু করলে তা সামগ্রিকভাবে দূরত্ব কমাবে এবং সময় বাঁচাবে। এর ফলে যাত্রাকালীন যে অর্থ খরচ হয়, তাও কমবে প্রায় ২৫ থেকে ৬০ শতাংশ! এক্ষেত্রে কলকাতা থেকে সরাসরি তুরা, বাঘমারা, দালু এবং দাউকির মতো গন্তব্যস্থলগুলিতে যাতায়াত করা যাবে।
তথ্য বলছে, ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একটি প্রকল্প পরিকল্পনা ও তার বিশ্লেষণ সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছে ভারতের ‘জাতীয় সড়ক এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম লিমিটেড’ (সংক্ষেপে – এনএইচআইডিসিএল)। সেই তথ্যাবলী বাংলাদেশের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। যাতে এই প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে যৌথভাবে একটি ইতিবাচক সমীক্ষা চালানো যায়।
এই বিষয়টি নিয়ে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, ‘যদি পশ্চিমবঙ্গের হিলি সীমান্ত থেকে বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ সীমান্ত পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, তাহলে মেঘালায়, বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব সবথেকে কম হবে। এবং প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটারের যাত্রাপথ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’
সাংমা মনে করেন, এই প্রস্তাব কার্যকর করতে পারলে, তা অর্থনৈতিকভাবেও সফল হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘এটি একটি সমান্তরাল অর্থনৈতিক করিডর হিসাবে গণ্য হতে পারে। কিন্তু, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত করা সহজ হবে না। কারণ, এর সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারও জড়িত থাকবে। বাংলাদেশের পালাবদল হওয়ার আগে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। ঢাকার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে কথা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে আবারও আমাদের দাবি উত্থাপন করব।’
যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি, তাতে কি আদৌ এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব? প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের।