CPIM Recruitment Scam Jalpaiguri 2010। বাম জমানায় কী হয়েছিল জলপাইগুড়িতে শিক্ষক নিয়োগে?

Spread the love

২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেলটাই বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর থেকেই বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। তবে এবার প্রশ্ন উঠছে বাম জমানায় কি শিক্ষক নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হত না? বাম জমানায় চিরকুটে চাকরির অভিযোগ বার বারই তোলেন বর্তমান তৃণমূল নেতৃত্ব।

সেই প্রসঙ্গে সবার আগে যে প্রসঙ্গটি সামনে আসে সেটা হল জলপাইগুড়িতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি।

প্রসঙ্গত সেই সময় এই প্রতিবেদক কর্মরত ছিলেন জলপাইগুড়িতে।

সূত্রের খবর, ২০১০ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল। সেই নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যপক স্বজনপোষন হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত ২০১০ সালের ৬ জুন জলপাইগুড়িতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল। ১২ হাজার আবেদনকারী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরপর লিখিত পরীক্ষার নম্বরের উপর ভিত্তি করে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছিল। এরপর ওই বছরের জুলাই মাসে সব মিলিয়ে ১৪১১ জনের প্যানেল প্রকাশ করেছিল জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। আর সেই প্যানেল প্রকাশ হওয়ার পরে বাম জমানায় একেবারে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।

সেই সময় দেখা গিয়েছিল সেই প্যানেলে সিপিএমের তৎকালীন জেলা সম্পাদকের পুত্রবধূ, সংসদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সহ একাধিক প্রভাবশালীদের আত্মীয়দের নাম। একের পর এক সিপিএম নেতার আত্মীয়দের নাম ছিল ওই তালিকায়। ময়নাগুড়ির তৎকালীন এক প্রভাবশালী সিপিএম নেতার আত্মীয়দের নাম প্যানেলে থাকাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সদুত্তর ছিল না তৎকালীন সিপিএম নেতাদের মুখেও।

সেই সময় সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব বার বার ছুটে যেতেন জলপাইগুড়িতে। তবে বর্তমান তৃণমূল জমানার সঙ্গে তৎকালীন বাম জমানার ফারাকটা ঠিক কেমন ছিল?

তৎকালীন সময়ে সংবাদমাধ্য়মে সিপিএমের এই স্বজনপোষণ নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে। ক্রমে অস্বস্তি বাড়তে থাকে সিপিএমের অন্দরে। জেলা সিপিএম নেতৃত্বও এনিয়ে যথেষ্ট চাপে পড়ে। সেই সময় সিপিএম নেতা বিমান বসু সহ অন্যান্যরা জলপাইগুড়ি গিয়ে গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করেছিলেন। তবে সেই সময় দলের একাংশ কার্যত দুর্নীতির বিষয়টি ঘনিষ্ঠ মহলে মেনে নিয়েছিলেন।

এরপর নড়েচড়ে বসে বামফ্রন্ট। ম্যানেজ করতে মাঠে নামে সিপিএম। শরিক দলের একাধিক নেতা মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন সেই সময়। এতে আরো চাপে পড়ে তৎকালীন সিপিএম নেতৃত্ব। এরপর প্রাথমিকভাবে ১৫জন নবনিযুক্ত শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছিল বলে খবর। তৎকালীন সংসদ চেয়ারম্যান ও সচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বামফ্রন্ট সরকার তদন্ত কমিটিও তৈরি করেছিল। ৪২৩ জন নবনিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছিল। পরে ক্ষমতার বদল হয়। এরপর তৎকালীন স্কুল শিক্ষা দফতর একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছিল।

আর এখন তৃণমূল জমানা। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সুর চড়াচ্ছে সিপিএমও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *