লক্ষ্মীবার বৃহস্পতিবার থেকে দেউচা-পাঁচামিতে খননকাজ শুরু হবে। বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) জানিয়েছেন, বুধবার ‘লাকি’ ডে। তাই আজ দেউচা পাঁচামিতে খননের কাজ শুরুর ঘোষণা করলেন। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ব্যাসল্ট খননের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি হল দেউচা পাঁচামি। আর সেই কয়লাখনির কারণে ১০০ বছরে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা হবে না। দেখা দেবে না বিদ্যুতের সংকট।
আর সেই দিনটার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিল রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। সেইসব কাটিয়েই কাজ শুরু করতে মরিয়া ছিল রাজ্য। তবে একটা সময় জমিদাতাদের মনে দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। গত মাসে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে মুখ্যসচিব মনোজ পন্তের সফরের পরে তাঁদের মনে আশা জন্মেছিল যে এবার খনির কাজ সত্যিই শুরু হতে তলেছে। আর ঠিক সেটাই হল।
রাজ্যের স্বপ্নের প্রকল্প দেউচা-পাঁচামি
সেইসময় রাজ্যের মুখ্যসচিব অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে এটা রাজ্যের স্বপ্নের প্রকল্প। দ্রুত সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। একবার সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেলে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলেও আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন মুখ্যসচিব। আজ মুখ্যমন্ত্রীও খননকাজ শুরুর ঘোষণা করার সময় জানিয়েছেন যে দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির জেরে স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। চাকরি পাচ্ছেন তাঁরা।
পুরো ব্যাসল্টের আস্তরণ সরানো হবে! তারপর কয়লা উত্তোলন
কিন্তু প্রথমে কেন ব্যাসল্টের খননকাজ করা হবে? সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, দেউচা-পাঁচামিতে যে কয়লা ভাণ্ডার আছে, সেটার উপরে ব্যাসল্টের পুরু আস্তরণ রয়েছে। আর সেটা একটু-আধটু নয়, ১০০ মিটার থেকে ৩৫০ মিটার পুুরু ব্যাসল্টের আস্তরণ আছে। যে আস্তরণ সরাতে বছরখানেকের মতো লেগে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।
ব্যাসল্ট থেকেই রাজ্য কামাতে পারে ৫,০০০ কোটি টাকা!
একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে, যে ব্যাসল্ট আছে, সেটা অত্যন্ত ভালোমানের। আর সেটার কারণে রাজ্যের কোষাগারে ৫,০০০ কোটি টাকা ঢুকতে পারে। তারপর কয়লা উত্তোলনের ব্যাপার আছে। যা ভারত তো বটেই, পুরো বিশ্বের বাজারের কাছে অত্যন্ত লোভনীয় হবে। সেই পরিস্থিতিতে বিজিবিএসের মঞ্চ থেকেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বার্তা দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে ৩৭৬ একর জমিতে প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা ছিল রাজ্যের। কিন্তু এখনও ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়নি। তাই আপাতত ৩২৬ একর জমিতেই ব্যাসল্ট খননের কাজ চলবে। বিষয়টি নিয়ে গত মাসে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, প্রথম দফায় ৩২৬ একর জমিতে কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে উপরের পুরু আস্তরণ তুলতে হবে। আর তারপর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে শলা-পরামর্শের ভিত্তিতে কয়লা তোলার কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যসচিব।