স্ত্রী মারা গিয়েছেন দু’দশক আগে। তাই একাকীত্ব কাটাতে দ্বিতীয় বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ৭৬ বছর বয়সি বৃদ্ধ। কিন্তু, দ্বিতীয় বিয়েতে আপত্তি জানিয়েছিলেন ৫২ বছর বয়সি ছেলে। তার জেরে ছেলেকে গুলি করে খুন করলেন বাবা। আর খুনের পর ছেলের মৃতদেহের পাশে দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে থাকলেন তিনি। এমনই ঘটনায় ঘটেছে গুজরাটের(Gujrat) রাজকোট(Rajkot) জেলার জাসদান শহরে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতের নাম প্রতাপ। ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা রাম বোরিচাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রতাপের স্ত্রী জয়া পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, যে রাম পুনরায় বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। ২০ বছর আগে তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। রাম অনেকদিন ধরেই দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য জোর ধরেছিলেন। কিন্তু, প্রতাপের তাতে আপত্তি থাকায় এ নিয়ে পরিবারের প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। প্রতাপের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রামের দ্বিতীয় বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই বয়সে তাঁদের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলে পরিবারের সুনাম নষ্ট হবে। জয়া জানিয়েছেন, রবিবার তিনি এবং তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন। তাঁদের ছেলে জয়দীপ দুধ কিনতে বেরিয়েছিলেন। আর তিনি পাশেই অবস্থিত শ্বশুরবাড়ির কাছে চা দিতে গিয়েছিলেন।
সেই সময় তাঁর স্বামী একা বাড়িতে ছিলেন। ঘরে ফিরে আসার রাস্তায় বাড়ি থেকে দুটি গুলির শব্দ এবং সেই সঙ্গে স্বামীর চিৎকার শুনতে পান তিনি। ছুটে গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। তখন তাঁর শ্বশুর ঘরের দরজা খুলে তাঁর দিকে পিস্তল তাক করে পিছু ধাওয়া করে। কোনওভাবে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন জয়া। কয়েক মিনিট পরে জয়দীপ ফিরে আসলে তিনি প্রতাপকে গুলি করার বিষয়টি জানান। ঘটনায় তিনি প্রতাপকে উদ্ধার করে জাসদানের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জয়া বলেন যে, দ্বিতীয় বিয়ের বিরোধিতার জন্য তাঁর শ্বশুর বারবার তাঁর স্বামীকে হত্যার হুমকি দিতেন। প্রায়শই বন্দুক দেখিয়ে গুলি চালানোর হুমকি দিতেন। জানা যাচ্ছে, প্রতাপ একজন কৃষক ছিলেন। এই ঘটনায় পুলিশ অপরাধে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করেছে। এটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। বোরিচা পুলিশকে জানিয়েছেন, যে তাঁর ছেলেকে হত্যা করার জন্য তার কোনও অনুশোচনা নেই। তিনি বলেছেন, ‘ও আমাকে অনেক হয়রানি করেছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, বোরিচা আগে জিএসআরটিসিতে কাজ করতেন।