গালাগালি যেন! নোনতা ও বিস্কুট কোম্পানির ট্রেডমার্ক দেখে কার্যত হতভম্ব হয়ে গেল নেটপাড়া। কারণ ১৯৯৯ সালের ট্রেডমার্ক আইনের ৩০ ধারার আওতায় একটি নোনতা এবং বিস্কুট কোম্পানির ট্রেডমার্ক হিসেবে ‘চুতিয়ারাম’ নামটা গৃহীত হয় বলে প্রাথমিকভাবে সংবাদমাধ্যম বার অ্যান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদনে জানানো হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি সেই ট্রেডমার্কে ছাড়পত্র দেয় দিল্লি ট্রেডমার্ক অফিস। আর সোমবার ট্রেডমার্ক জার্নালে সেটা প্রকাশিত হওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। যে প্রক্রিয়ায় সেই ট্রেডমার্কে অনুমোদন দেওয়া হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। আর সম্ভাব্য আইনি প্রভাব নিয়েও সন্দিহান হয়ে পড়েন বিশেষজ্ঞরা। তারইমধ্যে ওই সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রির তরফে দাবি করা হয়েছে যে ভুলবশত এমন ঘটনা ঘটেছে।
কোম্পানির নাম নিয়ে তুমুল হাসাহাসি শুরু নেটপাড়ায়
কিন্তু যতক্ষণে সেই সাফাই দেওয়া হয়েছে, ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তুমুল হাসাহাসি শুরু করেন নেটিজেনদের একাংশ। এক নেটিজেন বলেন, ‘এবার বাজারে আসছে নয়া নোনতা এবং বিস্কুট কোম্পানি।’ একজন আবার বলেন, ‘(দোকানে গিয়ে) কি এটাই বলব?’ আরও অনেকেই নানারকম মন্তব্য করতে থাকেন। তারপর ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রির তরফে সাফাই দেওয়ায় অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
কী কারণে ওরকম নামে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল?
প্রাথমিকভাবে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, যাঁরা পরীক্ষা করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন যে ‘চুতি’ এবং ‘রাম’ মিলিয়ে সেই ট্রেডমার্ক তৈরি করা হয়েছে। সেই নামটা সকলের থেকে আলাদা। অন্যান্য ট্রেডমার্কের থেকে সহজেই আলাদা করা যাবে। ওই ট্রেডমার্কে সরাসরি নোনতা সামগ্রী এবং বিস্কুটের কোনও প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়নি। তাই সংশ্লিষ্ট আইনের ৯ (১) ধারার আওতায় যে আপত্তি তোলা হয়েছিল, তা খারিজ হয়ে যাচ্ছে। আর ট্রেডমার্ক হিসেবে ‘চুতিয়ারাম’ নামটা গৃহীত হয়ে যায়।
‘অশ্লীল’ নাম গ্রহণ করা যায় না!
যদিও সেই সিদ্ধান্তের পরে প্রশ্ন তোলা হয় যে কীভাবে ১৯৯৯ সালের ট্রেডমার্ক আইনের ৯ (২) ধারাকে বিবেচনা করা হল না। কারণ ওই ধারার আওতায় এমন কোনও ট্রেডমার্ক নথিভুক্ত করা যাবে না, যা ‘কলঙ্কজনক, অশ্লীল, অথবা জনসাধারণের নৈতিকতার বিরোধী’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অর্থাৎ ওই ধারার আওতায় ট্রেডমার্ক হিসেবে এমন কোনও কিছু নথিভুক্ত করা যাবে না, যা অশ্লীল বিবেচিত হয়ে থাকে। একইভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে, গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করবে, এমন কোনও ট্রেডমার্কেও অনুমোদন দেওয়া হয় না। সেই পরিস্থিতিতে নোনতা এবং বিস্কুট কোম্পানির ট্রেডমার্ক হিসেবে ওরকম নামে অনুমোদন দেওয়া হওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর তারইমধ্যে শেষপর্যন্ত সাফাই দেওয়া হল।