ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন বিচার বিভাগ এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা এবং কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। জানা গিয়েছে এই মামলায় গৌতম আদানির পাশাপাশি সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের নির্বাহী এবং আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের নির্বাহী সিরিল কাবানেসকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আবহে গৌতন আদানি এবং তাঁর ভাইপো সহ বেশ কয়েকজন ভারতীয় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন। এদিকে এফবিআই সহকারী পরিচালক জেমস ডেনেহির অভিযোগ, আদানি ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল তারা। এরই মাধ্যমে আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে তারা টাকা তুলেছিল বাজার থেকে। দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, একটি এনার্জি প্রকল্পে সুবিধা পেতে আদানি গোষ্ঠী ভারতের আধিকারিকদের ঘুষ দিয়ে থাকতে পারে। এই আবহে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তদন্তে নেমেছে মার্কিন প্রশাসন। এদিকে ভারতের আরও এক সংস্থা অ্যাজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে বলে তখন জানানো হয়েছিল। সেই রিপোর্টেই আরও দাবি করা হয়েছিল, ওয়াশিংটনের বিচার বিভাগের দুর্নীতি প্রতিরোধ ইউনিট এবং নিউ ইয়র্কের পূর্ব জেলার অ্যাটর্নির অফিস এই তদন্ত চালাচ্ছে। যদিও সেই সময় এই নিয়ে মুখ খুলেছিল আদানি গোষ্ঠী।
ঘুষ নিয়ে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদানি গোষ্ঠীর তরফ থেকে বলা হয়, ‘আমরা এমন একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী, যারা শাসনের সর্বোচ্চ মান অনুসরণ করে কাজ চালিয়ে যায়। আমরা ভারত এবং অন্যান্য দেশে দুর্নীতি-বিরোধী এবং ঘুষ-বিরোধী আইনের সম্পূর্ণরূপে মেনে চলেছি।’ এদিকে ঘুষের অভিযোগ যদি ভারতে উঠেও থাকে, তাহলে এর তদন্ত কি আমেরিকার বিচার বিভাগ করতে পারে? উল্লেখ্য, ভারতীয় সংস্থা আদানির সঙ্গে মার্কিন সংস্থার ব্যবসায়িক যোগ রয়েছে। এই আবহে কোনও বিদেশি সংস্থা যদি আমেরিকার সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক সমপর্কে যুক্ত হয় বা মার্কিন বাজারে সেই বিদেশি সংস্থার উপস্থিতি থাকে, তাহলে বিদেশের মাটিতে সংগঠিত কোনও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত হতে পারে আমেরিকাতেই।