জঙ্গিপুরে ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে বিক্ষোভ পরিণত হয়েছিল হিংসায়। পুলিশের ওপরও হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে সেখানে। এই আবহে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেখানে ১৬৩ ধার জারি করা হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রামনবমীর উদাহরণ টেনে নিয়ে এসে প্রশাসনকে কড়া হওয়ার বার্তা দিলেন তিনি। এই নিয়ে রাজভবনের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতেই রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপাল জঙ্গিপুরের হিংসা নিয়ে নিজের বিবৃতিতে বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিংসা ছড়ানো হয়েছে। এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা উচিত নয়। যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী মিটেছে, তা থেকেই স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে যে প্রশাসন হিংসা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। আর মানুষও কোনও ভাবে অশান্তি চায় না। শান্তি বিঘ্নিত করার যে কোনও চেষ্টাকে তাই কঠোর হাতে দমন করা উচিত।’
উল্লেখ্য, সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশের প্রতিবাদে ৮ এপ্রিল উমরপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পুলিশ সেই অবরোধ তুলতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে অবরোধকারীরা। পালটা টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের অন্তত ২টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এর আগের দু’দিনও সুতি, সামশেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ চলেছিল ওয়াকফ সংশোধনীর বিরুদ্ধে। কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছিল পুলিশ। আর ৮ এপ্রিল ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েকশো মানুষ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলছিল অবরোধ। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিক্ষোভকারীরা। এরপর উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইট বৃষ্টি। জনতা ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রায় দুঘন্টা ধরে চলে খণ্ডযুদ্ধ।
এদিকে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, এখন জঙ্গিপুরের পরিস্থিতি পুরো শান্ত। এই আবহে কোনও গুজবে কান দিতে বারণ করা হয়েছে জনসাধারণকে। পুলিশ এই বিষয়ে লিখেছে, ‘জঙ্গিপুরের পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। অশান্ত জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। জাতীয় মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। যারা সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা গুজব রটাচ্ছে এবং ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করব, গুজবে কান দেবেন না। পাশাপাশি সকলকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’