দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় তীব্র বায়ু দূষণের দাপটে মানুষ জেরবার। প্রতি মুহূর্তে বিষাক্ত পরিবেশে শ্বাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। কিন্তু তাতে কী? উৎসব তো পালন করতেই হবে। তাই, গুরুগ্রামে আয়োজিত একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেদার ফাটানো হল আতসবাজি!
অভিযোগ, দূষণ সংক্রান্ত নিয়ম বিধি শিকেয় তুলে প্রকাশ্য রাস্তায় নানা ধরনের বাজি ফাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকা লোকজন। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
সূত্রের দাবি, গুরুগ্রামেরই এক বাসিন্দা তাঁর বাড়ির ব্যালকনি থেকে উৎসবের নামে আতসবাজির তাণ্ডবের সেই ভিডিয়োটি তুলেছেন। প্রায় ১ মিনিটের সেই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে, এক-একটি আতসবাজি ফাটার সঙ্গে সঙ্গে সেই এলাকায় ঘন ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠতে শুরু করেছে। মুহূর্তে ঘন কুয়াশার মতো ধোঁয়াশায় ঢেকে গিয়েছে আশপাশ! অথচ, বিয়ে বাড়ির শোভাযাত্রায় সামিল লোকজনের তাতে কোনও হুঁশ নেই। তাঁরা তার মধ্যেই মেতে উঠেছেন হুল্লোড়ে!
যে ব্যক্তি সোশাল মিডিয়ায় ওই ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন, তিনি লিখেছেন – ‘একিউআই ৯৯৯! আর গুরুগ্রামে লোকজন পটকা ফাটাচ্ছে? এসব কী হচ্ছে?’
এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। সকলেই এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ আবার মজার ছলে ওই বিয়ে বাড়ির লোকজনকে রীতিমতো ব্যঙ্গ করেছেন!
এক সোশাল মিডিয়া ইউজার যেমন লিখেছেন – ‘আসলে গুরুগ্রামে একিউআই ১,০০০-এ পৌঁছে গিয়েছে তো! তাই, এঁরা সেটা উদযাপন করছেন! বিশ্বের কোনও শহর আগে কখনও এমন কীর্তি স্থাপন করতে পারেনি!’
আরও একজনের মন্তব্য হল – ‘এটা আসলে জম্বি থিমে নিজেদের ঘর, বাড়ি সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি হ্যালোয়িন পালন করার মতো একটা ব্যাপার!’
অনেকে আবার বলেছেন, এমনিতেই দূষণের জেরে শহরের বায়ু বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। সেই বিষ আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিতেই নাকি এমন আয়োজন করেছেন ওই বিয়ে বাড়ির লোকজন!কারও কারও মতে, আসলে মানুষ বুঝতে পেরেছে বাঁচার আর কোনও উপায় নেই। তাই, সেই চেষ্টা করেও কোনও লাভ নেই। তাই তারা পটকা ফাটিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে!
কেউ কেউ আবার কটাক্ষের সুরে লিখেছেন, আসলে মানুষ তো জীবনে একবারই বিয়ে করে। তাহলে, এমন একটা সময় সে কেন অন্যদের কথা ভাববে? তাই, যত পারছে আনন্দ করে নিচ্ছে!
অনেকে আবার আফশোসের সুরে বলেছেন, আমরা একটা সমাজ হিসাবে চরম ব্যর্থ। তাই, আর কারও সমালোচনা করে লাভ নেই। এই বিষাক্ত পরিবেশে যে কটা দিন বাঁচব, আনন্দ করেই বাঁচা ভালো!