রাজনৈতিক কারণে খুন নাকি ব্যক্তিগত কারণে হত্যা? হরিয়ানার কংগ্রেস নেত্রী হিমানী নরওয়ালের মৃত্যু নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। তার মধ্যেই কংগ্রেস নেত্রীর মা দাবি করেছেন, নির্বাচন এবং দলই তাঁর মেয়ের জীবন নিয়েছে।হরিয়ানার রোহতকে ট্রলিব্যাগে তরুণীর দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তাঁর পরিচয় নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তারপরই হরিয়ানা কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়, যে তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছে, তিনি তাঁদের দলের নেত্রী হিমানী নরওয়াল। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ভারত জোড়ো যাত্রায়ও পা মিলিয়ে ছিলেন তিনি। কংগ্রেসের দাবি, রাজনৈতিক কারণেই খুন করা হয়েছে দলীয় কর্মীকে।
অন্যদিকে হিমানী নরওয়ালের মা সবিতা দাবি করেছেন, ‘নির্বাচন এবং দলই আমার মেয়ের জীবন নিয়ে নিয়েছে। এর ফলে তার কিছু শত্রু তৈরি হয়েছিল। এই হত্যাকারীরা দলের ভিতর থেকেই হতে পারে, কিংবা ওর বন্ধুরাও হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হিমানী ২৮ ফেব্রুয়ারি বাড়িতেই ছিল। আমার মেয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যে বাড়ছিল, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে যেত, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা পরিবারের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল, এজন্য কিছু মানুষ সমস্যায় পড়েছিল এবং তারা ঈর্ষান্বিত ছিল।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা পুলিশ স্টেশন থেকে ফোন পেয়েছিলাম। আমার মেয়ে আশা হুডা (ভূপিন্দর সিং হুডার স্ত্রী) খুব কাছের ছিল, আমি তার শেষকৃত্য করতে যাব না যতক্ষণ না সে ন্যায়বিচার পায়।’ তিনি জানান, ‘হ্যাঁ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল, আমরা কিছুটা ভয়ে থাকতাম। আমি আমার ছেলেকে বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠিয়েছিলাম , আমার বড় ছেলে ২০১১ সালে খুন হয়েছিল এবং আমরা কখনও ন্যায়বিচার পাইনি। তাই, আমি আমার ছেলেকে বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠিয়েছিলাম তার জীবন বাঁচানোর জন্য।’ ক্রোধে-দুঃখে ভেঙে পড়েছে নহিমানী নরওয়ালের মা। কোথায় যাবেন, কার কাছে যাবেন, কীভাবে মেয়ের জন্যে ন্যায়বিচার পাবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
এদিকে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ভূপিন্দর সিং হুডা বলেন, ‘কংগ্রেস তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং হত্যাকারী দলের ভিতরের কেউ, না বাইরের কেউ তা শুধু তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। হিমানী নরওয়ালের দেহ বর্তমানে মর্গে রয়েছে। কংগ্রেস কর্মীরা সেখানে গিয়েছেন। স্থানীয় বিধায়ক-সহ অন্যান্য বিধায়করা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা তদন্তের দাবি করেছি এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি চায়।’
হরিয়ানার কংগ্রেস বিধায়ক গীতা ভূক্কল বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। যেভাবে একটি মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। আমাদের রাজ্য, আমাদের সমাজ কোথায় যাচ্ছে? এর জন্য একটি উচ্চ-স্তরের তদন্ত হওয়া উচিত। হিমানী নরওয়াল দলের অত্যন্ত সক্রিয় কর্মী ছিলেন।’ অন্যদিকে কংগ্রেস বিধায়ক ভারত ভূষণ বাত্রা বলেন, হিমানী দীপিন্দর হুডার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ছিল।