ভোট কুশলী সংস্থা আইপ্যাককে নিয়ে এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আরও এক বিধায়ক। তাঁর দাবি, কর্পোরেট সংস্থা আইপ্যাকের অন্তত ১০ শতাংশ কর্মী নিজেদের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্যবহার করছে!
যে বিধায়ক এমন অভিযোগ করেছেন, তিনি হলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হুমায়ুন কবীর। এর আগে আইপ্যাককে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এবার প্রায় একই সুর শোনা গেল হুমায়ুনের গলাতেও।
‘জি ২৪ ঘণ্টা’র প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে তিনি দাবি করেন, দলের (তৃণমূল কংগ্রেসের) অন্তত ১০ শতাংশ কর্মী একেবারে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্যবহার করছেন। এবং এই একই অভিযোগ তিনি আইপ্যাকের বিরুদ্ধেও করেছেন। বলেছেন, ‘আইপ্যাকের ১০ শতাংশ কর্মী ব্যক্তিগত স্বার্থে তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্যবহার করছেন’!
শুধু তাই নয়, নির্বাচনে জিততেও যে দুর্নীতি চলছে, তাও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, জেলা বা রাজ্যের কোথায়, কী হচ্ছে তা তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু, গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে টাকার বিনিময়ে আসন বিক্রি হয়ে গিয়েছিল, সেই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত।
বিধায়কের অভিযোগ, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ আসন টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল!
এর আগে আইপ্য়াককে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মদন মিত্র। ‘রিপাবলিক বাংলা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছিলেন, আইপ্যাক নাকি তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক ক্ষতি করেছে!
মদনের বক্তব্য ছিল, তৃণমূল কংগ্রেস একটি রাজনৈতিক দল। তারা নির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শের উপর ভিত্তি করে চলে। কিন্তু, আইপ্যাক একটি কর্পোরেট সংস্থা। তাদের কোনও নীতি বা আদর্শ নেই। তারা শুধু টাকা রোজগার করতে চায়।
একইসঙ্গে, মদন মিত্র এও স্বীকার করেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দর থেকে চাওয়া হয়েছিল বলেই আইপ্য়াক বাংলার রাজনীতিতে ঢুকতে পেরেছিল। তবে, এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় – কে মূলত উদ্যোগী ছিলেন, সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন মদন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচন রেকর্ড আসনে জয়লাভ করে তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল কংগ্রেস। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, তাদের এই প্রত্যাবর্তনে বড় ভূমিকা ছিল আইপ্য়াক – বিশেষ করে সেই সময় আইপ্য়াকের সঙ্গে যুক্ত ভোটকুশীল প্রশান্ত কিশোরের।
কিন্তু, ইদানীংকালে আইপ্য়াক নিয়ে প্রকাশ্য়ে অসন্তোষ ও বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। আর এবার দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও একে একে আইপ্যাকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।