ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকের আগে সুর চড়াল বাংলাদেশ। বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সামনেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ডিরেক্টর জেনারেল মেজর জেনারেল মহম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। যে বিষয়গুলিতে আমরা মনে করেছি যে আমরা আগে বঞ্চিত হয়েছি, সেগুলির ক্ষেত্রে আমরা কড়া ভাষায় বলব’ যে এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশের ‘টোন’ আলাদা হবে, দাবি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
একইরকম সুর শোনা গিয়েছে বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গলায়। তিনি জানান, অতীতে ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল ঢাকা, তাতে কয়েকটি ক্ষেত্রে ভারসাম্যের অভাব আছে। দু’দেশের কিছুটা অসাম্য চুক্তি হয়েছিল। সেই বিষয় নিয়ে কথা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে এবার বিএসএফ এবং বিজিবির বৈঠকে বাংলাদেশের ‘টোন’ আলাদা হবে।
আর তাঁরা যে সব মন্তব্য করেছেন, সেটা আগামী মাসে হতে চলা বিএসএফ এবং বিজিবির ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) পর্যায়ের বৈঠকের আগে। সীমান্ত নিয়ে সংঘাতের মধ্যেই ফেব্রুয়ারিতে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সেই শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হবে। তার আগে বিষয়টি নিয়ে ভারতের তরফে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া না হলেও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ‘গরম’ মন্তব্য করা হচ্ছে। কখনও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, কখনও আবার বিজিবির কোনও আধিকারিক বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
চুপচাপ ঘুঁটি সাজাচ্ছে ভারত
অন্যদিকে ভারত যা করছে, সেটা পুরোই নিজেদের মধ্যে রেখেছে। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে, আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে হতে চলা বৈঠকের জন্য বিএসএফ বিস্তারিতভাবে পরিকল্পনা তৈরি করছে। বর্তমান পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে বৈঠকে কী কী বিষয় উত্থাপন করা হবে, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে ওই মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে।
কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে?
সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে সেই বৈঠক হবে। আগেই সেই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে কিছুটা পিছিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছেন বিএসএফ এবং বিজিবির শীর্ষকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সীমান্তে অনুপ্রবেশ, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, সীমান্তে বেড়া দেওয়ার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হতে পারে। বিশেষত সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একাধিক জায়গায় বেড়া দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বাহিনী সংঘাতে জড়িয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে সীমান্তের সমস্যা মেটাতে বৈঠকে আলোচনা করা হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।