India slams B’desh for Comment on Waqf। ভারতকে ‘জ্ঞান’ দিতে এসে সপাটে ‘চড়’ খেল বাংলাদেশ

Spread the love

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সহিংসতা নিয়ে সম্প্রতি ভারতকে ‘জ্ঞান’ দিতে এসেছিল বাংলাদেশ। তবে ঢাকার সেই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি। এই নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সমালোচনা করে বলেছে, ‘প্রতিবেশী দেশের উচিত আগে নিজেদের বাড়ির উঠোনে নজর দেওয়া, যেখানে জঘন্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’ উল্লেখ্য, ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন ২০২৫-এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় সহিংস সংঘর্ষ উত্তেজনা বাড়িয়েছে রাজ্যে। এই বিক্ষোভের জেরে সেই জেলায় অন্তত তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সহিংসতার পর এলাকায় শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) মোতায়েন করা হয়েছে। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়লওয়ালের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নৃশংসতা সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগের সাথে তুলনা করার একটি প্রচ্ছন্ন এবং ভুল প্রচেষ্টা। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের অপরাধীরা বাংলাদেশে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের উচিত অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য ও নৈতিকতা প্রদর্শনের পরিবর্তে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় মনোযোগী হওয়া।’ 

ওয়াকফ ইস্যুতে ইউনুসের সরকারের তরফ থেকে কী বলা হয়েছিল? এই নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, ‘মুর্শিদাবাদে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সেটার সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার যে কোনও প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি। আমরা মুসলিমদের উপরে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যে ঘটনার জেরে প্রাণহানি এবং সম্পত্তিহানি হচ্ছে। আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আর্জি জানাচ্ছি।’ যদিও মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশের হাত আছে বলে ভারত সরকারের তরফে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে যে ওই ঘটনায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা জড়িত আছে। সেই কথা আবার শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে।

উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে তা না নেওয়ার ঘোষণা করেন নিহতের পরিবার। এদিকে এলাকায় শানতি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বিএসএফ।

এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়েছিল। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এছাড়া জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *