মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনেও ভারতের কথা উল্লেখ করে পালটা শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। বিগত দিনে এই একই ঘোষণা একাধিকবার করেছেন তিনি। আগামী ২ এপ্রিল থেকে এই পালটা শুল্ক নীতি কার্যকর করতে পারে আমেরিকা। তবে দাবি করা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক নীতিতে এখনই শঙ্কিত হচ্ছে না দিল্লি। বরং জানা গিয়েছে, বর্তমানে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।
এর আগে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে পালটা শুল্ক চাপানো নিয়ে বড় ঘোষণা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে সম্প্রতি আবার একসপ্তাহ দীর্ঘ মার্কিন সফর শুরু করেছেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। সেই সময়তেই মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে শুল্ক নিয়ে বার্তা দেন ট্রাম্প। তবে জানা গিয়েছে, এই মার্কিন সফরকালেই বাণিজ্য নিয়ে নানা দর কষাকষি করবেন পীযূষ গোয়েল। এই আবহে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক হিন্দুস্তান টাইমসের কাছে দাবি করেছেন, ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে চলা মার্কিন পালটা শুল্কের হাত থেকে ভারত বেঁচে যেতে পারে। সেই আধিকারিকের দাবি, ভারত এবং আমেরিকা নিজেদের উদ্বেগের জায়গাগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা করছে। সেখানে শুল্কের ইস্যু ছাড়া অন্যান্য বাণিজ্যিক ‘বাধা’ নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৩ মার্চ থেকে মার্কিন সফর শুরু হয়েছে পীযূষ গোয়েলের। এই সফর চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। মার্কিন প্রশাসনের সামনের সারির বেশ কয়েকজন নীতি নির্ধারক এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই সফরকালে বৈঠকে বসছেন পীযূষ। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক চুক্তির একটি রূপরেখা তৈরি করতেই এই সব বৈঠক করা হচ্ছে বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় এক ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত, এর আগে সম্প্রতি গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর, ফার্মা পণ্যের ওপর শুল্ক চাপার ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। এপ্রিল মাসের ২ তারিখেই সেই সব পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর করতে পারে ট্রাম্পের সরকার। বিভিন্ন অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা যাতে আমেরিকায় গাড়ি তৈরি করতে শুরু করে, এর জন্যেই এই নয়া শুল্ক আরোপের পথে হাঁটা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মাঝে অবশ্য তাঁর ‘ডান হাত’ ইলন মাস্ক ভারতে টেসলার কারখানা চালু করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এর আগে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের আগে ‘প্রতিশোধমূলক শুল্ক’ আরোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, চড়া শুল্কের কারণে ভারতে ব্যবসা করা অত্যন্ত কঠিন। সাধারণত বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় মার্কিন পণ্যের উপরে বেশি শুল্ক ধার্য করে ভারত। সেই পরিস্থিতিতে এবার থেকে মার্কিন পণ্যের উপরে ভারত যে হারে শুল্ক চাপাবে, সেই হারেই ভারতীয় পণ্যের উপরে শুল্ক ধার্য করা হবে।
অপরদিকে এই সবের মাঝেই অপরদিকে সম্প্রতি মার্কিন বোরবন হুইস্কির ওপর শুল্ক কমিয়েছে ভারত। এর আগে মার্কিন বোরবন হুইস্কির ওপর ১৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছিল ভারত। তা এবার ৫০ শতাংশ কমিয়ে ১০০ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে জনপ্রিয় মার্কিন ব্র্যান্ড জিম বিমের দাম কমতে পারে ভারতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এই শুল্ক কমানোর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এর আগে এবারের বাজেটে মোটরসাইকেলের ওপরে শুল্ক কমায় ভারত। এর ফলে মার্কিন ব্র্যান্ড হারলে ডেভিডডসনের আমদানির ক্ষেত্রে ভারতে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক কমেছে। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত হারলে ডেভিডসনের ওপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছিল। আর এবারের বাজেটে তা আরও কিছুটা কমানো হয়।