ছয় বছরের ব্যবধানে একইদিনে হৃদয় ভেঙেছিল পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের। একটা সময় দু’দলই ভেবেছিল যে অনায়াসে তারা ম্যাচটা জিতে যাবে। হারিয়ে দেবে ভারতকে। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং ২০১২ সালের ১৮ মার্চ একদিনের ইতিহাসে নিজের কেরিয়ারের সর্বোচ্চ রান করে পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সেদিন ১৪৮ বলে ১৮৩ রানের ইনিংস খেলেছেন ভারতের ‘তরুণ তুর্কি’। আবার ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ শেষ বলে ছক্কা মেরে বাংলাদেশিদের কাঁদিয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক। আর সেই দুটি ঘটনাই ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল এশিয়া কাপে। বাংলাদেশের মীরপুরে হাইপ্রোফাইল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ৩২৯ রান তুলেছিল পাকিস্তান। ১০৫ রান করেছিলেন মহম্মদ হাফিজ। আর ১১২ রান করেছিলেন নাসির জামশেদ। ৩৪ বলে ৫২ রানে একটা মারকুটে ইনিংস খেলেছিলেন ইউনুস খানও।
সচিন ও রোহিতের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি বিরাটের
সেই বিশাল রান (২০১২ সালে একদিনের ক্রিকেটে ৩৩০ রান মানে অনেক) তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। তারপর দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর এবং বিরাট কোহলি। সচিন ৪৮ বলে ৫২ রান করে সচিন আউট হয়ে যাওয়ার পরে রোহিত শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন ভারতীয় তারকা। ১৯.৩ ওভারে দু’উইকেটে ১৩৩ রান থেকে ভারতকে ৪৫.৫ ওভারে দু’উইকেটে ৩০৫ রানে নিয়ে গিয়েছিলেন।
টিম ইন্ডিয়ার স্কোর যখন ৩০৫ রান ছিল, তখন ৬৮ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন রোহিত। কিছুক্ষণ পরে বিরাট ১৮৩ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। সেইসময় ভারতের স্কোর ছিল ৪৭.১ ওভারে চার উইকেটে ৩১৮ রান। ফলে বাকি ১৭ বলে বাকি ১২ রান তুলতে ভারতকে বেশি বেগ পেতে হয়নি। ৪৭.৫ ওভারেই চার মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন বিরাট।
শেষ বলে ছক্কা মেরে জিতিয়েছিলেন কার্তিক
আর সেই ঘটনার ছয় বছর পরে কলম্বোয় নিদহাস ট্রফির ফাইনালে শেষ বলে জয়ের জন্য পাঁচ বল রান দরকার ছিল। ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে দেন কার্তিক। কার্যত তাঁর একার জন্যই ম্যাচটা জিতেছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে আট উইকেটে ১৬৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আর ১৮ ওভার শেষে ভারতের রান ছিল পাঁচ উইকেটে ১৩৩ রান। পঞ্চম উইকেট পড়েছিল ১৮ তম ওভারের শেষ বলেই।
১৯ তম ওভারে ২২ রান তুলেছিল ভারত
অর্থাৎ শেষ দু’ওভারে জয়ের জন্য ৩৪ রান দরকার ছিল ভারতের। আর প্রথম বলে নেমেই ছক্কা মেরেছিলেন কার্তিক। দ্বিতীয় বলে মেরেছিলেন চার। তৃতীয় বলে হাঁকিয়েছিলেন ছক্কা। সেই ওভারে মোট ২২ রান উঠেছিল। ফলে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল। কিন্তু ওই ওভারটা কার্যত ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বিজয় শংকর। ১৯.৪ ওভারে চার মেরেছিলেন। পঞ্চম বলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন।
সেইসময় ক্যাচ আউট হলে স্ট্রাইক পরিবর্তনের সুযোগ ছিল। ফলে শংকর আউট হওয়ার ফলে স্ট্রাইক এসেছিলেন কার্তিক। শেষ বলে ছক্কা মেরে ভারতকে নিদহাস ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন করে দিয়েছিলেন। আট বলে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ বলে ৫৬ রান করেছিলেন রোহিত।