রাজ্যে একাধিক রেলপ্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রে অন্য়তম অন্তরায় হল জমিজট। সেই জমি সংক্রান্ত সমস্যার জেরে একাধিকবার রেলপ্রকল্পের কাজ আটকে গিয়েছে। এদিকে এই রেলপ্রকল্প নিয়ে নানা সময়ে নানা ধরনের তরজা চলেছে। তবে এবার এনিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য রেলের বাজেট বরাদ্দ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণ ও আইনশৃঙ্খলার মতো সমস্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠি দিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।
রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন যাতে জমি অধিগ্রহণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাহায্য করে সে জন্য মুখ্য়মন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠি লেখা হয়েছে। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন তাতে বিশেষ লাভ হয়নি।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বা জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে রাজ্য সরকার সক্রিয় হলে দ্রুত প্রকল্প শেষ করা সম্ভব। রেলের কাজের জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের ছাড়পত্র লাগে। পশ্চিমবঙ্গে সেই ছাড়পত্র পাওয়া বেশ সমস্যার।
কার্যত একাধিক রেলপ্রকল্প না হওয়া নিয়ে দায় যে রাজ্যেরও সেটাই মনে করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী।
এদিকে এবারের বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য সব মিলিয়ে ১৩,৯৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন পশ্চিমবঙ্গের জন্য় গড়ে যে অর্থ (৪৩৮০ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হত তার চেয়ে বর্তমান বাজেটে চার গুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে রাজ্যের জন্য। রাজ্যে যে কয়েকটি প্রকল্প চালু রয়েছে তার প্রকল্পমূল্য প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা। তবে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের একাধিক রেলপ্রকল্প জমি অধিগ্রহণ ও আইনশৃঙ্খলার সমস্যার কারণে আটকে রয়েছে। এদিকে যে প্রকল্পগুলি আটকে রয়েছে তার মধ্য়ে অন্য়তম হল নৈহাটি-রানাঘাট, দীঘা-জলেশ্বর, বালুরঘাট-হিলি, সাঁইথিয়া-সীতারামপুর সহ একাধিক রেলরুটে নানা কারণে রেলপ্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত করা যায়নি বলে খবর।
তবে সম্প্রতি কেন রেলপ্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না তা নিয়ে খোঁজ নিয়েছিলেন রাজ্য়ের মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ।
রেলের কোনও প্রকল্প যাতে জমি জটের জেরে আটকে না থাকে সেটা দেখার জন্য় প্রশাসনিক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কোথায় কোথায় এই ধরনের জমি জট রয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
সম্প্রতি নবান্নে রেলকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব। সেখানেই তিনি রেলকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে তা তিনি জানতে চান। কোথায় এই রেলপ্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে সেটা তিনি জানতে চান। রেলদফতরের আধিকারিকরা তাঁকে সবিস্তারে এনিয়ে জানিয়ে দেন। বৈঠকে পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনও ছিলেন।
রেলের কোন জমিগুলি জবরদখল হয়ে যাচ্ছে সেই প্রসঙ্গও ওঠে এই বৈঠকে। কেন এইভাবে জমি জবরদখল হয়ে যাচ্ছে সেই প্রসঙ্গেও হয় আলোচনা। আন্ডারপাস সহ নানা ক্ষেত্রে কোথায় জমি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে সেগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে নির্দেশ দেন মুখ্য়সচিব। সেই সঙ্গে মেট্রো প্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রে জমি সংক্রান্ত কোন সমস্যা রয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।