নয়াদিল্লি স্টেশনের পদপিষ্টের ঘটনার পরে হুঁশ ফিরল ভারতীয় রেলের। শুক্রবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পৌরহিত্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে যে কোন স্টেশন কতটা বড়, সেটার উপর নির্ভর করবে যে কত টিকিট বিক্রি করা হবে। কোনওরকম বিপদ যাতে না ঘটে, সেজন্য প্রাথমিকভাবে দেশের অন্যতম ৬০টি ব্যস্ত স্টেশনে স্থায়ীভাবে ‘ওয়েটিং এরিয়া’ তৈরি করা হবে। যেখানে যাত্রীরা অপেক্ষা করতে পারবেন। যখন ট্রেন আসবে, তখনই যাত্রীদের স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হবে। একমাত্র যাঁদের কনফার্মড টিকিট (রিজার্ভড টিকিট) আছে, তাঁরা সরাসরি প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে পারবেন। যাঁদের টিকিট কনফার্ম হয়নি, ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রী এবং টিকিটহীন যাত্রীদের সেই ‘ওয়েটিং এরিয়া’-য় অপেক্ষা করতে হবে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে।
আর রেলের তরফে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভগামী ট্রেন ধরার জন্য নয়াদিল্লি স্টেশনে ভিড় উপচে পড়েছিল। তার জেরে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আর সেই যে ভয়াবহ পরিস্থতি তৈরি হয়েছিল, সেটার অন্যতম কারণ হিসেবে অনিয়ন্ত্রিত টিকিট বিক্রির বিষয়টি উঠে আসে। স্টেশনে কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, সেটা বিবেচনা না করেই যত খুশি টিকিট বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল।
ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের থাকতে হবে ‘ওয়েটিং এরিয়া’-য়!
সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার লাগামহীন টিকিট বিক্রির উপরে রাশ টানতে চলেছে রেল। শুক্রবার রেলের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত দেশের যে ৬০টি স্টেশনে মাঝেমধ্যেই ভিড় উপচে পড়ে, সেগুলির বাইরে নির্দিষ্টভাবে ‘ওয়েটিং এরিয়া’ তৈরি করা হচ্ছে। তবে কোন কোন স্টেশনে সেই পদক্ষেপ করা হবে, তা রেলের তরফে জানানো হয়নি। যে বিষয়টি গত বছর উৎসবের মরশুমের সময় নয়াদিল্লি, আনন্দ বিহার, বারাণসী, অযোধ্যা, পাটনার মতো স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল।
ফাঁক-ফোকর দিয়ে স্টেশনে দেওয়া ঢোকা যাবে না!
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, প্ল্যাটফর্মে অত্যধিক ভিড় এড়াতে স্টেশনে ঢোকার সমস্ত অনুমোদনহীন পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে দেওয়া হবে শুধুমাত্র কনফার্মড টিকিট থাকা যাত্রীদের। বাকিদের বাইরে অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ প্ল্যাটফর্মে সকলের এন্ট্রি মিলবে না। তাছাড়া ভিড় সামলানোর জন্য আরও চওড়া ফুট ওভারব্রিজ (১২ মিটার ও ছয় মিটার চওড়া), ওয়্যার রুমের মতো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তৈরির প্রস্তাবেও অনুমোদন দিয়েছে রেলওয়ে।
রেলের কর্তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন দ্রুত!
সেইসঙ্গে যাত্রীদের ভিড় সামলানোর জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা মোতায়েন করা হবে। স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য স্টেশনের অধিকর্তাদের হাতে আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ছাড় দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।