IPL-র ঘুম কাড়তে ‘ক্রিকেটের গ্র্যান্ডস্ল্যামের’ ছক সৌদিতে

Spread the love

সৌদি আরব(Saudi Arab) গোপনে একটি নতুন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ পরিকল্পনা করছে, যা কয়েক দশকের মধ্যে ক্রিকেট জগতকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। আসলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই লিগ ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হয়ে উঠতে পারে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই টি-টোয়েন্টি লিগের পরিকল্পনা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তৈরি হচ্ছে। এবং এটি নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়ার প্রাক্তন অলরাউন্ডার নিল ম্যাক্সওয়েল-এর মস্তিষ্কপ্রসূত, যিনি বর্তমান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ম্যানেজার।

৫০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরবের SRJ Sports Investments এই নতুন টি-টোয়েন্টি লিগের প্রধান বিনিয়োগকারী হবে এবং এটি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪,৪০০ কোটি টাকা) সমর্থন পাবে। বর্তমান বিনিময় হারে যা প্রায় ৪৩,৪৭.২৩৫ কোটি ভারতীয় রুপির সমতুল্য। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, আইসিসির (ICC) সঙ্গে আলোচনা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং আইসিসি-র বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন প্রাক্তন বিসিসিআই (BCCI) সচিব জয় শাহ(Jay Shah)।

সৌদি আরবের ক্রীড়া সম্প্রসারণ

নতুন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগের উদ্বোধন হলে এটি সৌদি আরবের দ্রুত সম্প্রসারিত ক্রীড়া খাতের আরও একটি সংযোজন হবে। ইতিমধ্যে দেশটি LIV Golf, ফর্মুলা ১ রেস এবং ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব অর্জন করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, নিল ম্যাক্সওয়েল পূর্বে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ACA) এবং ক্রিকেট নিউ সাউথ ওয়েলস (Cricket NSW)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন।

লিগের কাঠামো ও দলসংখ্যা

প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন টি-টোয়েন্টি লিগে মোট আটটি দল থাকবে। লিগটি টেনিসের গ্র্যান্ড স্লাম প্রতিযোগিতার আদলে গঠিত হবে, যেখানে বছরের বিভিন্ন সময়ে চারটি ভিন্ন স্থানে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

টেনিস গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতাগুলি—অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন ও ইউএস ওপেন—বছরে চারবার অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেটের ব্যস্ত আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে, এই নতুন টি-টোয়েন্টি লিগটি এমন সময়ে আয়োজন করা হবে যাতে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর (যেমন—আইপিএল ও বিগ ব্যাশ লিগ) সঙ্গে সংঘর্ষ না হয়।

দলসংখ্যা ও ফাইনাল ভেন্যু

এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি দল একটি আলাদা দেশ থেকে আসতে পারে এবং এর মধ্যে একটি দল অস্ট্রেলিয়ার হবে। লিগটিতে পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগের প্রতিযোগিতা থাকবে এবং ফাইনাল সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।

কেন প্রয়োজন নতুন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ?

নতুন টি-টোয়েন্টি লিগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল—টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা। বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ক্রিকেটকে টিকিয়ে রাখতে পারছে, অন্য দেশগুলোর টেস্ট ক্রিকেট আর্থিকভাবে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে।

বর্তমান রাজস্ব বণ্টন ব্যবস্থায় আইসিসি থেকে সদস্য দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ অর্থ ও সম্প্রচার স্বত্বের রাজস্ব ভারতের দিকেই বেশি ঝুঁকে থাকে। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ভারতের পরে রয়েছে, কিন্তু ছোট ক্রিকেট খেলিয়ে দেশগুলো আর্থিক সংকটে ভুগছে।

এই প্রেক্ষাপটে, সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন টি-টোয়েন্টি লিগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আর্থিক ভারসাম্য বদলে দিতে পারে। তবে, এখন দেখার বিষয় হবে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এই সৌদি-সমর্থিত টি-টোয়েন্টি লিগকে অনুমোদন দেন কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *