গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে চলছে অচলাবস্থা। এরই মধ্যে গাজায় হামলা চালিয়ে প্রায় ২০০ জনের প্রাণ কেড়ে নিল ইজরায়েল। এই অভিযান প্রসঙ্গে ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা মঙ্গলবার ভোরে গাজাজুড়ে একাধিক টার্গেটে আঘাত হেনেছে। এদিকে এই হামলার পরই প্রশ্ন উঠেছিল, আমেরিকাকে অন্ধকারে রেখেই কি গাজায় এই হামলা চালায় ইজরায়েল? এর জবাবে হোয়াইট হাউজ জানিয়ে দেয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেই ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে গাজায় এই হামলার পর ইজরায়েলকে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়ে হামাস বলেছে, ইজরায়েল মনে হয় তাদের দেশের বন্দিদের আশা ত্যাগ করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় তিনটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে, গাজা সিটিতে একটি ভবনে হামলা চালানো হয়েছে এবং খান ইউনিস ও রাফাহতেও হামলা চাানো হয়েছে। প্যালেস্তিনীয় সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, গাজায় অন্তত ৩৫টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে শুরু হওয়া তিন দফা যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখা নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। এই মাঝে আজকের এই হামলা। এদিকে আমেরিকা এবং আরবের মধ্যস্থতায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন করে যুদ্ধবিরতি বহাল রাখা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল এবং হামাস। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সাল থেকে হামাসকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’-এর তকমা দিয়ে আসছে আমেরিকা এবং তাদের বেশ কয়েকটি মিত্র রাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা ভূখণ্ড থেকে আচমকাই ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়েছিল হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী। নির্বিচারে খুন করা হয়েছিল ইজরায়েলের সাধারণ মানুষজনকে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু ইজরায়েলিকে। এদিকে এই সুযোগে ইজরায়েলের ওপর হামলা চালানো হয় লেবানন থেকেও। অভিযোগ, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা গোষ্ঠী ইজরায়েলের ওপর হামলা চালায় লেবানন থেকে। এই আবহে লেবাননকে পালটা জবাব দিয়েছে ইজরায়য়েলও। এদিকে গাজায় ঢুকে পড়ে হামাসকে তাড়া করেছিল ইজরায়েলি সেনা। এই সবের মাঝেই ইরানও মিসাইল হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলে। উল্লেখ্য, ইরানে থাকা হামাস প্রধান শিনওয়ারিকে এর আগে খতম করে ইজরায়েল। সব মিলিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল গাজা যুদ্ধের আঁচ। এই আবহে ইজরায়েলি হামলায় প্রায় ৫৩ হাজার প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, হামাসের আক্রমণে নিহত প্রায় দু’হাজার ইজরায়েলি।