তুলকালাম হয়েছিল যাদবপুরে। একেবারে ধুন্ধুমার কাণ্ড। তুমুল ঝামেলা। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির উপরেও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী গাড়ির নীচে এক ছাত্র আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে এসএফআইয়ের তরফে।
এদিকে ঘটনার পরেই ময়দানে নেমে পড়েছে এসএফআই। রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআই।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল ও এসএফআইয়ের মধ্য়ে দ্বন্দ্ব একেবারে চরমে উঠেছে। এমনকী শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির উপর হামলার ঘটনা কতটা ছাত্র সুলভ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসকদলের অনেকে।
তবে তার পালটা জবাব দিচ্ছেন এসএফআইয়ের নেতৃত্বরাও। একাধিক কথা ঘুরছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। সেখানে একটা কথা নজর কেড়েছে অনেকের। সেটা হল, লেখাপড়া করে যে, গাড়ি চাপা পড়ে সে। আসলে ব্রাত্য বসুর গাড়ির নীচে আহত হয়েছিলেন এক ছাত্র। পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরই এই ঘটনা।
অপর একটি ছবি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে ১৯৭৫ সালে মমতা। সেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি একটি গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। ওপরে লেখা ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির উপর উঠে বাঁদরামো কেন করবে? অনেকের প্রশ্ন আপনিও তো গাড়ির বনেটে উঠেছিলেন?মনে পড়ছে! তবে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য় এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন ১৯৯৬ সালের ছবি। সেখানে কর্মীদের সামনে ভাষণ দেওয়ার জন্য উঠেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ঘটনার সঙ্গে এর মিল নেই।
আসলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় যুক্তি-পালটা যুক্তি চলছেই। বাম ছাত্র সংগঠন তাদের মতো করে যুক্তি সাজাচ্ছে। তৃণমূল তার পালটা যুক্তি দিচ্ছে। তার মধ্য়েই সোশ্য়াল মিডিয়ায় ঘুরছে নানা কথা, নানা ছবি। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে পুরনো নানা ঘটনার কথা। এই ভয়াবহ ঘটনার পরে কিছুক্ষেত্রে মজাদার ছবিও ঘুরছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়।
এমনকী বামেদের কেউ কেউ আবার যাদবপুরের ঘটনাকে লখিমপুরের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন। যেভাবে লখিমপুর খেরিতে কৃষকের উপর গাড়ি তুলে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতার পুত্র সেই ঘটনাকে সামনে আনছেন বামেরা। কার্যত যাদবপুরের সঙ্গে তুলনা টানার জন্য এই ধরনের প্রসঙ্গকে সামনে আনার চেষ্টা করছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
ইতিমধ্য়েই এসএফআই আগামী ৩ মার্চ রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। কার্যত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্য জুড়ে নতুন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে বামেরা। আর এবার যাদবপুরের ঘটনাকে পুরোদমে কাজে লাগাতে চাইছেন বামেরা।
তবে গাড়ি চাপা কাণ্ড নিয়ে দেবাংশু ভট্টাচার্য সোশ্যাল মিডিয়া লিখেছেন, ‘গোটা স্কর্পিও গাড়ি বডির উপর দিয়ে চলে যাওয়ার পর আপনি ইন্টারভিউ দিতে পারবেন? ওরা পারে। কারণ ওরা শিক্ষিত।’ কুণাল ঘোষ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘গাড়ির তলায় ভয়ঙ্করভাবে পিষে যাওয়ার এক্সরে রিপোর্টে কোনও ফ্র্যাকচার নেই। বিপ্লবী পোস্টদাতারা একটু রিপোর্টটা পোস্ট করবেন প্লিজ? তা না করে শুধু ‘আমি সোমা বলছি’র মডেলে মিথ্যাচারের নাটক কতক্ষণ চলবে? গাড়িতে হামলা, কাচ ভাঙা, জাতীয় পতাকা খোলা, ঝুলতে থাকা, বেয়ে ওঠার অসভ্যতার মধ্যে কেউ নিজেই পড়ে যেতেই পারে। তারপর ভিকটিম কার্ড খেলে হামলা থেকে নজর ঘোরানোর নাটক চলতে পারে না।’