Jaishankar on Trump’s Foreign Policy। ট্রাম্পের বিদেশ নীতি অনেকাংশেই ভারতের জন্যে ভালো

Spread the love

ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump) দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আমেরিকার বিদেশ নীতিতে বেশ কিছু বদল এসেছে। তার মধ্যে যেমন ইউক্রেন আছে, তেমনই আছে বাংলাদেশ। ইউক্রেন যুদ্ধে কার্যত যেন ভ্লাদিমির পুতিনের হয়েই ব্যাট করছেন ট্রাম্প। অপরদিকে এর আগের বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের ভালো সম্পর্ক ছিল না। যদিও ‘অগণতান্ত্রিক’ ইউনুস সরকারের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল বাইডেন প্রশাসনের। তবে ট্রাম্প জমানায় সেই ঘনিষ্ঠতা উধাও। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বললেন, ‘ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন বিদেশ নীতিতে যে বদল আসবে, তা আমরা আশা করেছিলাম। অনেকাংশেই সেটা ভারতের জন্যে ভালো।’

লন্ডনে চ্যাথাম হাউসের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ব্রোনওয়েন ম্যাডক্সের সাথে এক আলোচনায় জয়শংকর বলেন যে, ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে দিল্লি আশ্চর্য হয়নি। তাঁর কথায়, ‘বেশিরভাগ সময়, রাজনৈতিক নেতারা যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার বেশিরভাগটাই করেন বা অন্তত চেষ্টা করেন। তারা সবসময় সফল হন না, অথবা তাঁরা সবসময় যা চান তা পান না। কিন্তু সব রাজনৈতিক নেতাদের নিজেদের একটি এজেন্ডা থাকে। এই আবহে আমি মনে করি, গত কয়েক সপ্তাহে আমরা যা দেখেছি এবং শুনেছি, তার বেশিরভাগটাই প্রত্যাশিত ছিল। তাই আমি একটু অবাক হয়েছি যে অন্যরা তা দেখে অবাক হচ্ছেন।’ 

জয়শংকর বলেন, ‘আমেরিকায় এখন আমরা একজন রাষ্ট্রপতি এবং প্রশাসন দেখছি যারা বহুমেরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের পক্ষে এটা বেশ উপযোগী। আমাদের কখনও আমেরিকান রাষ্ট্রপতিদের সাথে কোনও সমস্যা হয়নি, অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে। আমাদের ওপর এমন কোনও বোঝা নেই যা আমরা বহন করে চলেছি।’ এদিকে সাম্প্রতিককালে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন ব্রিকস দেশগুলি আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ডলারের ‘বদলি’ খুঁজছে। তবে জয়শংকর দাবি করেন, মার্কিন আন্তর্জাতিক মুদ্রারূপে ডলারের বদলি খোঁজার কোনও নীতি ভারতের নেই। তাঁর কথায়, ‘মার্কিন ডলার মুদ্রারূপে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উৎস। আর আমরা বিশ্বে আরও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই। বিশ্বব্যাপী মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির মধ্যে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেই।’

উল্লেখ্য, এর আগে মোদীর মার্কিন সফরকালে বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘মোদী দেখে নেবেন’। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার বিরোধিতা করে আসা আমেরিকা এখন ঝুঁকেছে পুতিনের দিকেই। সেটাও ভারতের জন্যে ‘ভালো’। কারণ এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারত-রশিয়া সম্পর্কে ‘চিড়’ ধরানোর চেষ্টা করেছিল বাইডেন প্রশাসন। তবে কোনও চাপের সামনেই মাথা নত না করে ভারত নিজের স্বাধীন নীতিতে এগিয়েছে। আর এখন ট্রাম্প-পুতিন রসায়নে পশ্চিমী ইউরোপ যেন বিভাজিত হয়ে পড়েছে। এদিকে বিগত দিনে ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে হাতকড়া পরিয়ে দেশে ফেরানো হয়েছে। যা নিয়ে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে জোর তরজা হয়েছিল। তবে ট্রাম্প যে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করবেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। তাঁর রাজনৈতিক এজেন্ডার মধ্যে অভিবাসন ইস্যুটি একদম প্রথম সারিতে ছিল। এছাড়া আরও একটি ইস্যুকে ট্রাম্প অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন, তা হল শুল্ক। এই আবহে ভারত সহ বিভিন্ন মিত্র রাষ্ট্রকেও রেয়াত করছেন না ট্রাম্প। তবে এটাও যে হওয়ারই ছিল, তা আগে থেকেই ঘোষণা করে রেখেছিলেন ট্রাম্প। এই আবহে জয়শংকরও দাবি করলেন, ট্রাম্প যা বলেছিলেন, তাই করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *