আগামী দিনে যে শহর কলকাতায় যেখানে-সেখানে মুরগির মাংসের দোকান দেওয়া যাবে না, মানতে হবে নানা ধরনের নিয়ম-কানুন, সেকথা আগেই জানা গিয়েছিল। এবার শোনা যাচ্ছে, নতুন নিয়ম চালু করা বা সেই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করার আগে শহরের মুরগির দোকানগুলি পরিদর্শন করবেন কলকাতা পুরনিগমের প্রতিনিধিরা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এখনও পর্যন্ত যা পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা হল – আগামী শুক্রবার থেকেই পোস্তা, বড়বাজার এবং জগন্নাথ ঘাট এলাকায় অভিযান চালাবেন কলকাতা পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের খাদ্য সুরক্ষা শাখার প্রতিনিধিরা।
এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য কী?
মূলত মুরগি ব্যবসায়ীরা কীভাবে মুরগি কাটছেন, মুরগির পালক, রক্ত প্রভৃতি জৈব বর্জ্যগুলি কোথায় কীভাবে ফেলছেন, মুরগির মাংস কাটার সময় আদৌ স্বচ্ছতার বিষয়গুলি মাথায় রাখা হচ্ছে কিনা, দোকান বন্ধ করার পর রক্ত, পালক সমস্ত ঠিকঠাক পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা, এসবই দেখবেন পুরপ্রতিনিধিরা।
মুরগির দোকানগুলিকে কী ধরনের নিয়ম মানতে হতে পারে?
পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বর্তমানে যেভাবে প্রকাশ্যে জ্যান্ত মুরগী কাটা হয়, সেটা বন্ধ করতে চাইছে তারা। কারণ, এই দৃশ্য অনেকের কাছেই বেশ অস্বস্তিকর। পাঁঠার মাংসের ক্ষেত্রে যেমন প্রকাশ্যে ছাগল বা পাঁঠা কাটা যায় না। মাংস কেটে পরিষ্কার করে তা দোকানে ঝোলানো হয়। মুরগির মাংসের ক্ষেত্রেও তেমন নিয়ম চালু করা হতে পারে।
তাছাড়া, পাঁঠার মাংসের দোকানে রাস্তার দিকের খোলা অংশে কাচের দেওয়াল দিতে হয়। এতে মাংসে নোংরা বা ধুলো লাগার সম্ভাবনা কমে। আগামী দিনে মুরগির দোকানেও এমন করা হতে পারে।
এখন যেখানে-সেখানে লোকে প্লাস্টিক পেতে বা ঝাঁকা নিয়ে মুরগির মাংস বিক্রি করতে বসে যায়। ফলে, বহু জায়গায় ফুটপাথ, রাস্তা দখল হয়ে যায়। দুর্গন্ধ ছড়ায়। এমনকী, এর থেকে সংক্রমণ ছড়ানোরও আশঙ্কা থাকে। আগামী দিনে এভাবে মাংসের দোকান দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বরং, পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন দোকানে মাংস বিক্রি করার নিয়ম চালু করা হতে পারে।
এই উদ্যোগ শুরু হল কীভাবে?
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কর্পোরেশনের মাসিক অধিবেশনে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রবীণ বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত। কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের উদ্দেশে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আবেদন জানান তিনি।
সেই আবেদন মেনেই এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন অতীন। পুরনিগমের বক্তব্য, আগামী দিনে যাতে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসম্মতভাবে এবং অত্যাধুনিক পদ্ধতিতেই মুরগির মাংস কাটা ও বিক্রি করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে তারা।