হিন্দু দেব-দেবীর মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও বাহন রয়েছে। যেমন ধরুন গনেশের ইঁদুর, কার্তিকের বাহন ময়ূর ঠিক তেমনি মা লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা। পেঁচা যে মা লক্ষ্মীর বাহন এ কথা তো সকলেরই জানা কিন্তু এটা কি জানেন কেন মা লক্ষ্মী পেঁচাকেই বেছে নিলেন বাহন হিসেবে? এর পেছনে রয়েছে কিন্তু এক অজানা ইতিহাস।
কীভাবে পেঁচা মা লক্ষ্মীর বাহন হল?
শাস্ত্রমতে মনে করা হয়, যখন প্রকৃতি এবং পশু পাখির সৃষ্টি হয় তখন প্রত্যেক দেব-দেবী নিজের বাহন বেছে নিচ্ছিলেন। অন্যান্য দেব দেবীর মতো মা লক্ষ্মীও নিজের বাহন বেছে নেওয়ার জন্য মর্ত্যে আগমন করেন। মা লক্ষ্মী মর্ত্যে আসার পর পৃথিবীর সমস্ত পশু-পাখি মা লক্ষ্মীর বাহন হওয়ার জন্য আবেদন জানায়।
সমস্ত পশু পাখির আবেদন শুনে মা লক্ষ্মী বলেন, আমি কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে মর্ত্যে ভ্রমণ করব। সেই দিন আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য যে পশু বা পাখি সবার আগে আসবে তাকেই আমি বেছে নেব আমার বাহন হিসেবে।
মা লক্ষ্মীর এই কথা শুনে সকলেই এক কথায় রাজি হয়ে যায়। তবে অমাবস্যার রাত ভীষণ অন্ধকার হয়ে থাকে তাই যে সমস্ত পাখি এবং পশু দিনের বেলা ভ্রমণ করে তারা কেউ রাতে মা লক্ষ্মীর কাছে আসতে পারে না। অবশেষে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে যখন মা লক্ষ্মী মর্ত্যে আগমন করেন তখন তিনি দেখেন শুধুমাত্র পেঁচা অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য।
পেঁচা যেহেতু নিশাচর প্রাণী তাই পেঁচা সবার আগে পৌঁছে যায় মা লক্ষ্মীর সঙ্গে দেখা করার জন্য। পেঁচার এই গুণাবলীতে খুশি হয়ে দেবী লক্ষ্মী সেই মুহূর্ত থেকে পেঁচাকে নিজের বাহন হিসেবে বেছে নেন।
গুণের নিরিখেও কম যায় না এই প্রাণী
একটি নিশাচার প্রাণী হওয়া ছাড়াও পেঁচা ভীষণ বুদ্ধিমান প্রাণী। এছাড়াও অতীত এবং ভবিষ্যতের সমস্ত লক্ষণ বুঝতে পারে এই পাখিটি। তাই বাড়িতে পেঁচার আগমন হলে বলা হয় সেই বাড়িতে লক্ষ্মীর আগমন হয়েছে। ঠিক এই কারণে পেঁচাকে লক্ষ্মী পেঁচাও বলা হয়।