বিগত কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে প্রশ্ন ফাঁস ইস্যু। গতবারও মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছিল মালদার এক চক্রের বিরুদ্ধে। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে এবারের মাধ্যমিক নিয়ে সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে মালদা থেকে এক গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, জীবন দাস নামে ওই গৃহশিক্ষকের মদতেই হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ খুলে প্রশ্ন ফাঁস করছিলেন পরীক্ষার্থীরা। এই আবহে মানিকচকের মালুটোলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এক পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে এই প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে চিহ্নিত করে তাদের পরীক্ষা বাতিল করেছিল পর্ষদ। সেই সব মনে করিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘গতবার মালদা জেলায় সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন ছড়ানোর চেষ্টা করা একটি দল ধরা পড়েছিল। এ বছর মালদা জেলায় বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে? পরীক্ষাকেন্দ্রের চার পাশে ৫০০ মিটারের মধ্যে সব ফটোকপির দোকান সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কেন্দ্রের আশপাশে ইন্টারনেটেও কড়াকড়ি থাকছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের জন্য সব ধরনের প্রশাসনিক সাহায্য করা হবে।’
প্রসঙ্গত, বিগত বহু বছর ধরেই প্রায় প্রতিবছরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটেছে। সেই বিষয়টি রুখতে ২০২৪ সালে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রে ইউনিক কোড বসানো হয়েছিল। আর সেই কোডের সাহায্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে ২০২৪ সালে উচ্চমাধ্যমিকের স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হয়েছিল। এই বছরও সেই ব্যবস্থা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে সংসদ। তবে পরিবর্তন আনা হচ্ছে প্রক্রিয়ায়। আগে পুলিশকর্মী তল্লাশি করেছিল। এবার পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করবে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা।
গত কয়েকবছর ধরে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এর আগে উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র প্রথমে ‘ট্রেজারি’ বা নির্দিষ্ট থানায় যেত। সেখান থেকে সেগুলি ভাগ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হতো। সেখান থেকে প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যেত সমস্ত প্রশ্নপত্র। তারপর পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধান পরীক্ষকের ঘরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হতো। আর পরীক্ষার ‘কেন্দ্র’ অনুযায়ী পুনরায় ‘সিল’ করে পাঠানো হতো। এবার সংসদের তত্ত্বাবধানে ছাপাখানাতেই প্রশ্নপত্র বাছাই হয়ে যাবে। পরীক্ষার্থী সংখ্যার উপর নির্ভর করে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট করা হবে। পরীক্ষার্থীদের সামনেই পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগে খোলা হবে প্রশ্নের প্যাকেট। তখন সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।