নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সভায় যোগ্যদের চাকরি যাবে না বলে আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিনের সভায় প্রায় আধ ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন তিনি। সভায় মমতা যোগ্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি কেড়ে নিতে দেব না।’
এদিনের সভায় মমতা বলেন, ‘আমার শরীরে রক্ত – মাংস আছে। কিন্তু হৃদয়ে পাথর নেই। একথা বলার জন্য আমাকে জেলে পুরে দেওয়া হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমার হৃদয় পাথর হয়ে গিয়েছে। লাল, নীল, গেরুয়া কোনও রঙ দেখব না। আমাকে জেলে ভরলে ভরুক। যোগ্য ব্যক্তির চাকরি যাতে না যায়, আমরা সেটা সবসময় চাই।’
যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি কেড়ে নিতে দেব না। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।’ এর পরই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন বলে ঘোষণা করেন মমতা। বলেন, ‘অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, রাকেশ দ্বিবেদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণ রাজ্য সরকারের হয়ে যোগ্যদের হয়ে আইনি লড়াই চালাবেন।’
তিনি বলেন, ‘আদালতের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে, যাঁরা স্কুলে পড়াতেন তাঁদের জন্য আদালতের ব্যাখ্যা কী? স্কুল কে চালাবে? বাকি কাজ কে চালাবে? কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার তো কারও নেই। চাকরি দিতে পারবেন না, আমার অনুরোধ তাঁরা যেন চাকরি কেড়ে না নেন। যাঁরা যোগ্য, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।’
এর পরই উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন তিনি। মমতা বলেন, ‘আপনারা কি এখনও বরখাস্তের নোটিস পেয়েছেন? চাকরি করুন না। মানবতার স্বার্থে স্বেচ্ছায় সকলেই কাজ করতে পারেন।’ তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। মানবিকতার খাতিরে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের হাতে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা তুলে দিক। ব্যাখ্যা দিক। শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। ২ মাস কষ্ট করলে ২০ বছর শান্তিতে থাকতে পারবেন।’
সভায় হাজির ছিলেন প্রচুর অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীও। তাদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগে যোগ্যদের বিষয়টি মিটে যাক। তার পর যাদের ‘অযোগ্য’ বলা হচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কী কী তথ্য আছে আমি দেখব। আবার আপনাদের ডাকব। সব কাজগপত্র তদন্ত করে দেখব। সত্যি যদি তাঁরা ‘অযোগ্য’ বলে প্রমাণিত হন, আমার তখন কিছু করার থাকবে না। কিন্তু কাকে কেন অযোগ্য বলা হয়েছে, কে তদন্ত করেছে, আলাদা করে সেটা দেখতে হবে। আলাদা করে সেটা নিয়ে আমি কথা বলব। সকলে নিশ্চিন্তে থাকুন। যোগ্য-অযোগ্যের মধ্যে গোলমাল লাগাবেন না। নিশ্চিন্ত ভাবে আপনারা শিক্ষা দিন, শিক্ষিত করুন। পথ হারালে নতুন পথ ঠিক বেরিয়ে যায়’