Muhammad Yunus। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপ! বাংলাদেশে নারী নির্যাতন হচ্ছে

Spread the love

আন্তর্জাতিক নারী দিবস (৮ মার্চ, ২০২৫) পালনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে অনেক ভালো ভালো কথা শোনালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। তাঁর আমলে বাংলাদেশে যে নারীনিগ্রহ রমরমিয়ে চলছে, কার্যত তাও স্বীকার করে নিলেন তিনি। মনে করালেন ইতিহাসে নারীর অবদান। প্রতিশ্রুতি দিলেন নারীসুরক্ষার। এবং অবশ্যই বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, তাঁরা যে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন, সেখানে নারীনিগ্রহের কোনও স্থান নেই।

শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনুস।

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’-এ এই সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেই অনুসারে এদিনের সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়েই ইউনুস বলেন, ‘সম্প্রতি নারীদের ওপর যে জঘন্য হামলার খবর আসছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। এটি নতুন বাংলাদেশ-এর যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, তার সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা এই নতুন বাংলাদেশে নারী-পুরুষ সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা আমাদের সব শক্তি প্রয়োগ করে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।’

অর্থাৎ – তিনি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে বাংলাদেশে মহিলাদের অবস্থা ক্রমশ শোচনীয় হয়ে উঠছে। তাঁরা হামলা, আক্রমণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। প্রসঙ্গত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-সহ বিভিন্ন জায়গায় ইদানীংকালে বাংলাদেশে যে নারীনিগ্রহ বেড়েছে, তা সেদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাই বলছেন।

তাঁদের একাংশ – এমনকী – অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিএনপি নেতৃত্ব – সকলেই এই ধরনের কট্টরপন্থী, নারীবিদ্বেষী এবং পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। যার জেরে ইউনুস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি এই প্রেক্ষাপটে কিছুটা বাধ্য হয়েই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মঞ্চে ভাষণ দিতে উঠে নারীর অধিকার ও সম্মান নিয়ে ভালো ভালো কথা শোনালেন ইউনুস?

ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর কট্টরপন্থীরা মহিলাদের উপর ফতোয়া জারি করেছে। খেলোয়াড় থেকে অভিনেত্রী – বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতী নারীদের নানাভাবে হেনস্থা, নিগ্রহ ও অপমানের শিকার হতে হয়েছে। আর, সংখ্যালঘু মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তো সেই কবে থেকেই উঠছে। সেই প্রেক্ষাপটে এত দিনে নারীর উপর অত্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মহম্মদ ইউনুস!

এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘নারীবিরোধী যে শক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাকে আমরা দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অবশ্যই মোকাবিলা করব।’

তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ‘আমাদের সমাজে এখনও এমন বহু মানুষ আছে, যারা নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাঁদের খাটো করে দেখে, অবজ্ঞার চোখে দেখে। অথচ নারীর প্রতি হিংসা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে, বৈষম্যহীন ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হলে নারীর পাশে দাঁড়ানো, তাঁদের সমর্থন জানানো ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।’

ইউনুস বলেন, ‘আমাদের সমাজে নারীকে খাটো করে দেখার এই দৃষ্টিভঙ্গি পালটাতে হবে। তা না হলে আমরা জাতি হিসেবে এগোতে পারব না।’

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এদিনের এই মঞ্চ থেকেই বাংলাদেশের বর্তমান অরাজকতার জন্য নিজের দায় ঝেড়ে ফেলারও চেষ্টা করেন ইউনুস। তাঁর দাবি, ‘পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে, যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে ছিলাম।’

প্রশ্ন হল – এখানে ‘পতিত স্বৈরাচার’ বলতে কাকে বা কাদের কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করছেন ইউনুস? যে বা যারা রীতিমতো পয়সা খরচ করে বাংলাদেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করছেন তিনি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *