মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান এবং ওয়াকফ হিংসা কবলিত এলাকাগুলিতে আজ ১০ দিন পর ফের খুলল স্কুল। গত ১১ এপ্রিল শেষ স্কুলে গিয়েছিল এখানকার পড়ুয়ারা। তারপর কিছু পড়ুয়া বিপথে চালিত হয়ে হিংসার পথে হেঁটেছিল। আর কিছু পড়ুয়া পরিবারের সঙ্গে ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছিল। আর বাকিরা আতঙ্কিত অবস্থায় বাড়িতেই দিন কাটিয়েছিল। তবে আজ, ২১ এপ্রিল ফের মুর্শিদাবাদের হিংসা কবলিত এলাকাগুলির সব স্কল খুলেছে। সকাল সকাল বাস এসে পড়ুয়াদের নিয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত মিলছে সেখানে।
তবে এতদিন স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের ক্ষতি হবে বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দা দেব কুমার সাহা। বার্তাসংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, ‘আজ ১০ দিন পরে স্কুল খুলেছে। এতদিন হিংসার জন্যে স্কুল এবং টিউশন সব বন্ধ ছিল। এটা তাদের পড়াশোনার ওপরে অনেক প্রভাব ফেলবে।’ আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘১০ দিন পর এখানে স্কুলগুলো আবার খুলেছে। ১১ই এপ্রিলের পর থেকে সহিংসতার কারণে স্কুলগুলি বন্ধ ছিল। ধুলিয়ানের পরিস্থিতি এখন অবশ্য ভালো। এখন কোনও সমস্যা নেই। এর আগে অতীতে এখানে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি।’
এদিকে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি আনন্দ রায় জানান, এখন সেখানে পরিস্থিতি শান্ত। সবই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ওয়াকফের নামে যে হিংসা ও তাণ্ডবলীলা চলেছিল, তাতে ১৫৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৯২ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে তা না নেওয়ার ঘোষণা করেন নিহতের পরিবার। এদিকে এলাকায় শান্তি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বিএসএফ।
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়েছিল। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এছাড়া জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।