মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদকে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ বানাতে চাইছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই আবহে আজ তিনি একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন, যেখানে দাবি করা হয়, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে বহু মানুষ হিংসা থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছেন গঙ্গা পার করে। সেই পোস্টে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, ধুলিয়ানের বেশ কিছু গ্রামে নাকি পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দিয়ে মানুষ মারার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সুকান্ত নিজের পোস্টে লেখেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, ধর্মান্ধ মৌলবাদী দানবদের এই হিংস্র তাণ্ডব কোনও নির্দিষ্ট আইনের বিরোধিতা করে নয়। পশ্চিমবঙ্গের নিরীহ বাঙালি হিন্দুদের উপর এই নারকীয় পৈশাচিকতা আদতে দীর্ঘ পরিকল্পনার ফসল! ইসলামী মৌলবাদীদের সন্ত্রাসের চূড়ান্ত বর্বরতায় একদিন যেভাবে ওপার বাংলা থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দুদের এপারে আসতে হয়েছিল উদ্বাস্তু হয়ে, আজকের মুর্শিদাবাদ তার আদর্শ প্রতিফলন।’
এরপর বালুরঘাটের সাংসদ আরও বলেন, ‘ধুলিয়ানের হিন্দুপ্রধান গ্রামগুলিতে পানীয় জলে বিষক্রিয়া থেকে শুরু করে হিন্দুদের উপাসনালয় ধ্বংস করা, নির্বিচারে হিন্দুদের খুন, মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট করা এগুলো কি আদৌ আন্দোলনের অংশ? ব্যর্থ মূখ্যমন্ত্রী তাঁর স্বপ্নের ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ বানানোর বরাত যাদের কাঁধে দিয়েছেন, তার শুরুটা আসলে মুর্শিদাবাদ থেকে হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণের সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা এখনই জাগরিত এবং সংগঠিত না হলে আগামীদিনে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে হিন্দুদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার এই জঘন্য চক্রান্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।’
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ স্থানীয়দের। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এলাকায় এখন বিএসএফ টহল দিচ্ছে। জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জের রানিপুরের জাফরাবাদে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, বাবা ও ছেলেকে প্রথমে পেটানো হয়েছে, তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ি ও টোটো। অভিযোগ, পুলিশকে বারবার ফোন করা হলেও পুলিশ আসেনি।
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয় এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলে লুটপাট চালানো হয়। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থা করা হয় বিধায়ককে। জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় টহল দিচ্ছে বিএসএফ।