এর আগে শেষবারের মতো ডিসেম্বরের শুরুর দিকে গোলাগুলির আওয়াজ ভেসে এসেছিল রাখাইন প্রদেশ থেকে। তবে ফেব্রুয়ারির শেষ লগ্নে ফের বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেল টেকনাফে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় প্রায় রাত ১১টা নাগাদ টেকনাফ, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপের মতো জায়গায় শোনা যায় গোলাগুলির আওয়াজ। এদিকে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছিলেন আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রাখছে।
এর আগে মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের আবহে বাংলাদেশ সীমান্তে মাঝেমাঝেই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গিয়েছিল। এদিকে সীমান্তের ওপারের অশান্তির আঁচ এসে পড়ছে বাংলাদেশেও। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেছিলেন, মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে আছে তারা। রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জুন্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। এই আবহে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এদিকে মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর আগে মংডু শহর দখলের সঙ্গে সঙ্গেই সেই ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই দখলে চলে গিয়েছে আরাকান আর্মির। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের সিত্তে শহরটি জুন্তার দখলে রয়েছে। তবে প্রদেশের অধিকাংশের ওপরই জুন্তার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মাঝে মধ্যেই এয়ারস্ট্রাইক করছে জুন্তা। তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ঠিক কী ঘটেছে, তা জানা যায়নি।
এদিকে রাখাইন প্রদেশে এখনও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা আছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে রোহিঙ্গারা আপাতত জুন্তাকে সমর্থন করছে। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে অনেক রোহিঙ্গা দেশে ফিরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। আবার আরাকান আর্মিও নাফ নদের তীরে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই আবহে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস নিজে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তে বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এর মাঝেও সম্প্রতি আরাকান আর্মির হাতে আটক হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। পরে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের ফিরিয়ে এনেছিল বিজিবি। এদিকে এর আগে জানুয়ারি মাসেই চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছিল মায়ানমার সেনার ১২ জন সদস্য। এছাড়াও এর মধ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টাও জারি থেকেছে বিভিন্ন জায়গায়।