শ্রীলঙ্কার কাছে থাকা কচ্ছতিভু দ্বীপ ফেরত চেয়ে তামিলনাড়ু বিধানসভায় সম্প্রতি প্রস্তাবনা পাশ হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে। এরই মাঝে আবার বিমসটেক সম্মেলন শেষ করে শ্রীলঙ্কাতে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। এই আবহে মোদীকে ‘মিত্রবিভূষণ’ সম্মান দিল শ্রীলঙ্কা। দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং পারস্পরিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকার প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সম্মানিত করেছে। উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই শ্রীলঙ্কা ভারতের থেকে চিনের দিকে বেশি ঝুঁকেছিল। এই আবহে তারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল। গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল সেই দেশে। এরপর গত নির্বাচনে বামপন্থী অনুরা দিশানায়েক শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁর সময়কালে মোদীর এই লঙ্কা সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই আবহে আজ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলোম্বোতে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘মিত্রবিভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করেছেন। অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, ‘এই পুরস্কার আমার কাছে নয়, ১৪০ কোটি দেশবাসীর সম্মানের বিষয়। শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যে গভীর মৈত্রী ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে এই ঘটনায়।’ এদিকে দিশানায়েকে বলেন, ‘ভারত ও শ্রীলঙ্কা বরাবরই কাছাকাছি ছিল। আমাদের মধ্যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মিত্রভূষণ সম্মান পাওয়ার জন্যে যোগ্য।’
জানা গিয়েছে, ‘মিত্রবিভূষণ’ পদকের গায়ে একটি কলস আঁকা আছে। এছাড়া এতে ধানের পাতা দেখা যায়, যা সমৃদ্ধির লক্ষণ। এছাড়া এর ওপর খচিত রয়েছে ৯টি রত্ন। পদকটিতে চাঁদ ও সূর্যের চিত্র রয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাস নির্দেশ করে। অর্থাৎ দুই দেশের সম্পর্ক অতীত থেকে বর্তমান এবং আজ থেকে ভবিষ্যতে দীর্ঘদিন সৌহার্দ্যপূর্ণ থাকবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের মধ্যে আজ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ত্রিঙ্কোমালিকে শক্তির কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এছাড়াও, শ্রীলঙ্কাকে একাধিক ক্ষেত্র ভিত্তিক অনুদান সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ভারত। দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকে সম্পুর সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে মোদীকে আশ্বাস দেন যে, ভারতের নিরাপত্তা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর কোনও পদক্ষেপের জন্যে শ্রীলঙ্কা কাউকে তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।