Nilanjana। ‘প্রথমবার ছেড়েছিলাম ভালোবাসার জন্য! আর দ্বিতীয়বার কাজ ছাড়ি…’

Spread the love

নাম নীলাঞ্জনা। একসময়ের আলোচিত অভিনেত্রী, প্রযোজক হিসাবেও বর্তমানে সুপ্রতিষ্ঠিত নাম তিনি। তবে হ্যাঁ, যিশু সেনগুপ্তের স্ত্রী হিসাবেই সাম্প্রতিক সময়ে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছেন নীলাঞ্জনা। ব্যক্তিগত আপ্ত সহায়ক শিনাল সুর্তির সঙ্গে যিশুর প্রেম ও সহবাসের খবর ঘিরে বারবার উঠে এসেছে অভিনেতার স্ত্রী নীলাঞ্জনার কথা। তাঁর সঙ্গে যিশুর বিবাহ-বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মাঝে নিজের নামের পাশ থেকে ‘সেনগুপ্ত’ পদবীও সরিয়ে ফেলেছেন নীলাঞ্জনা। শুধু নিজের নামেই এখন তাঁর পরিচিতি। সম্প্রতি ‘Straight Up with Shree’ নামে এক পডকাস্টে হাজির হয়ে নিজের সম্পর্কে নানান বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন নীলাঞ্জনা।

একসময়ে অভিনেত্রী হিসাবে বেশ চর্চিত নাম ছিলেন নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত। কেরিয়ার গড়ে তুলেছিলেন মুম্বইয়ে হিন্দি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে। ‘হিপ হিপ হুররে’ সিরিয়ালে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন নীলঞ্জনা। তবে কেরিয়ারের জন্য মুম্বইতে থাকা শুরু করলেও ব্যক্তিগত কারণে একাধিকবার নিজের সেই কেরিয়ার জলাঞ্জলী দিয়েছেন তিনি। ‘স্ট্রেট উইথ আপ উইথ শ্রী’ পডকাস্টে নীলাঞ্জনাকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রথমবার কেরিয়ার ছেড়েছিলাম ভালোবাসে বোম্বে ছেড়ে কলকাতা চলে এসেছিলাম। (প্যাহেলিবার কিয়া থা, প্যায়ার কে লিয়ে, বম্বে ছোড়কে আগ্যায়ী ম্যায় ক্যালকাটা) তারপর আবারও ফিরে গিয়ে বম্বেতে টেলিভিশন কাজ করার কথা ভাবিনি। যদিও আমার কাছে সে অপশন অবশ্য ছিল। আমি একথা মাকেও বলেওছিলাম, মা বললেন, করার দরকার নেই।’

নীলঞ্জনার কথায়, ‘দ্বিতীয়বার যখন আমি কাজে ফিরলাম, সেটা প্রোডাকশন হাউস খোলার পর। তখন মা বলেছিলেন, আমি সারাকে দেখব, তুমি কাজ শুরু করো। তবে শেষবার যখন দেখলাম, মায়ের শরীর ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। আর আমার স্বামী কাজের সূত্রে নানান জায়গায় থাকে, তখন সারাও ক্রমশ বড় হয়ে উঠছিল। সেসময় অবশ্য আমারও বয়স কমই ছিল। তবে আমি বলেছিলাম, আমি পারব না। আমার পক্ষে মাল্টিটাস্কিং হওয়া (একসঙ্গে অনেক কাজ করা) সম্ভব নয়।’

একসময় ঠিক কী কারণে তাঁর মা, কিংবদন্তী অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকও অভিনয় ছেড়ে ঘরকন্যা সামলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সাক্ষাৎকারে সেকথাও খোলসা করেন নীলাঞ্জনা। তিনি বলেন, তাঁর মা অঞ্জনা ভৌমিক কোচবিহারের মেয়েছিলেন। তাঁরা ৬ বোন, তিন ভাই। অনেক বড় পরিবার ছিল। আর নীলাঞ্জনার দাদু ছিলেন মেডিক্য়াল রিপ্রেজেনটেটিভ। তবে একসময় কোচবিহার থেকে কলকাতায় এসে কাজ শুরু করেছিলেন অঞ্জনা ভৌমিক। তিনিও তাঁর পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব ‘বড় ছেলে’র মতো করেই সামলেছিলেন। ভাইবোনেদের পড়াশোনা শেখানো থেকে বিয়ে দেওয়া সব দায়িত্বই পালন করেছিলেন অঞ্জনা ভৌমিক। নিজে বিয়ে করেছিলেন সব শেষে, তখন তাঁর বয়স ছিল ২৯ বছর। 

নীলাঞ্জনা বলেন, তিনিও তাঁপ মাকে প্রশ্ন করেছিলেন যেন কেন কাজ ছেড়েছিলেন? বিয়ের পর কাজ করায় কি কোনও বাধা ছিল? তখন অঞ্জনা ভৌমিক জানিয়েছিলেন, তিনি যখন অভিনয় করতেন, সেসময় একদিন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাটক করে বাড়ি ফেরার পর তাঁর ছোট্ট মেয়ে (নীলঞ্জনা) একবার মায়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। মা-কে কাছে না পাওয়ার জন্য ছোট্ট শিশুর সেই রাগের কারণেই কাজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। নীলঞ্জনার কথায়, তাঁর কাছে আমার মা-ই (অঞ্জনা ভৌমিক) হল লক্ষ্মী, যিনি একসময় পরিবারের আর্থিক দায়িত্বও সামলেছেন, আর সন্তানদের জন্য কাজ ছাড়তেও দ্বিধা করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *