মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন তিনি,দেখতে এতটাই সুন্দরী ছিলেন যে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ঘর থেকে বেড়াতে দিতেন না তাকে।আর আজ সেই মহিলাই ভোর ৫ টা থেকে রাস্তার ধারে চা বিক্রি করছেন।বয়স এখন তার ৭৫।রয়েছে চার ছেলে।তার মধ্যে একটি ছেলে প্রতিবন্ধী,তার বয়স ৫২।বৃদ্ধ মায়ের চায়ের দোকানের পাশেই শুয়ে থাকে।না পারে খেতে, না পারে কথা বলতে,না পারে নিজের কাজটুকু করতে।ফলে বৃদ্ধ মাই ছেলের সমস্ত কাজ করে দেন।বৃদ্ধ মায়ের এখন একটাই চিন্তা তার মৃত্যুর পরে এই ছেলেকে কে দেখবে?
ছেলেকে দেখাশোনার সাথে সিআইটি মোড়ের আনন্দপালিতে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বৃদ্ধা কিরণ জানা।স্বামীর মৃত্যুর পর ২০০৭ সাল থেকে নিজে ভোরে উঠে দোকান খুলতেন,সেই প্রথা আজও পালন করে চলেছেন। শুধুমাত্র কাজকে ভালোবেসে ভোর থেকে দুপুর আবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চা বানিয়ে যান তিনি।প্রত্যেক দিন অক্লান্ত পরিশ্রম কিরণ দেবী নির্দিদ্ধায় করে চলেন ।আর সবসময় তার মুখে থাকে একগাল হাসি।খুব বিশাল ক্রেতা না হলেও সারা মাসে যা রোজগার হয় তাতে মা ও তার প্রতিবন্ধী ছেলের পেটের ভাত জোগাড় হয়ে যায়।কিরণ দেবী জানান,তিনি ভালোবেসে এই কাজ দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে করে চলেছেন,আর তা শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত করে যাবেন বলে জানান।এছাড়াও তিনি বলেন,তিনি বৃদ্ধা বলে অনেকেই মনে করেন চা বানাতে পারেন না,তাই লোক খেতে আসে না,আবার কিছু মানুষ আসেন চা খান ও বলেন এই বয়সে এইভাবে কাজ করে চলেছেন আপনার হাতে জল খেলেও শান্তি অনুভব করব।ঠিক এইভাবেই দিন কাটে বছর ৭৫ এর বৃদ্ধার।
পাশাপাশি কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি এই বৃদ্ধাকে সাহায্য করতে চান তাহলে একবার আনন্দপালিত বাস স্টোপেজে গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।সাথে তার হাতে বানানো অসাধারণ চা অবশ্যই খেয়ে আসবেন।বৃদ্ধার এমন মনোবল ও সাহসকে ইনিউজবাংলার তরফ থেকে কুর্নিশ জানাই।