১৯৭১ সালে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে) নিজেদের নাগরিকদের ওপরই অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিল পাক সেনা। আর এবার যেন পাকিস্তান সেই একই ভুল করছে বালোচিস্তানে। বর্তমান পাকিস্তানের ৪৪ শতাংশ জমি এই প্রদেশে। জসংখ্যার নিরিখে অবশ্য বাকি পাক প্রদেশের থেকে ‘ছোট’। আর তাই স্বাধীনতার পর থেকেই পাক পঞ্জাবের শাসকগোষ্ঠী হেয় করে এসেছে বালোচদের। আর অত্যাচার সহ্য করতে করতে স্বাধীনতাকামী বালোচরা ফের একবার গোলাবারুদ, বন্দুক তুলে নিয়েছে। তবে শান্তিতেও আন্দোলন করছে বালোচদের একটা অংশ। সম্প্রতি নোবেল শান্তি পুরুষ্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন তাঁদেরই মধ্যে অন্যতম মাহরাং বালোচ। তবে রিপোর্টে এবার দাবি করা হল, পাক সেনার নির্দেশে নাকি মাহরাংকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে গ্রেফতার করেছে বালোচিস্তান পুলিশ। এর আগে মাহরাংয়ের বাবা এবং ভাইকে পাক সেনা খুন করেছিল বলে অভিযোগ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২১ মার্চ কোয়েটায় পাক সেনার অত্যাচারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল বালোচ ইয়াকজেহতি কমিটি। সেই প্রতিবাদকে ছত্রভঙ্গ করতে নাকি সাধারণ মানুষের ওপরে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বালোচ পুলিশ। সেই হামলায় একাধিক বালোচের মৃত্যু হয়। প্রাণ হারায় নাবালকরাও। একাধিক শিশু সহ অন্তত পাঁচজন আন্দোলনকারীকে কোয়েটার রাস্তায় খুন করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে বালোচিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। এরই মাঝে অভিযোগ উঠেছে, বিক্ষোভে বালোচদের খুন করে পুলিশ তাদের দেহ গুম করে নিয়ে চলে যায়। এদিকে মাহরাং বালোচকেও নাকি আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে ১৯৭১ সালে কতটকা এভাবেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনৈতিক ভাবে গ্রেফতার করে নিজেদের কফিনে নিজেরাই পেরেক পুঁতেছিল পাকিস্তান। অকথ্য অত্যাচার, কয়েক লাখ মানুষকে খুন, ধর্ষণ করেও শেষ পর্যন্ত লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল তাঁদের। এদিকে বালোচিস্তানে বাংলাদেশের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি না, তা সময় বলবে। তবে পাকিস্তান ফের একবার নিজেের দেশের নাগরিকদের ওপরেই ‘ক্র্যাকডাউন’ শুরু করেছে।
এদিকে এর আগে সম্প্রতি বালোচ লিবারেশন আর্মি পাকিস্তান সেনার ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে। বোলান অঞ্চলে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ হোক কি পুলওয়ামা স্টাইলে পাক সেনার বাসে বিস্ফোরণ ঘটানো, বিএলএ চোখে চোখ রেখে পাক সেনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাচ্ছে। এবং সশস্ত্র স্বাধীনতাকামীদের কাছে বারবার মার খেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হচ্ছে পাক প্রশাসন।