আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানে প্রাণ গেল কমপক্ষে ১২ জন সেনা সদস্যের। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএফপি এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, একদিন আগেই আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় সংঘর্ষের জেরে আটজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও নাশকতার ঘটনা ঘটল পাকিস্তানে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করা হচ্ছে, মঙ্গলবার বান্নু এলাকায় এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘একটি চেকপয়েন্টের কাছেই এক সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি উড়িয়ে দেয়। তারপর, তারপর তার সহযোগীরা সেখানে গুলি চালাতে শুরু করে।’
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, ‘এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এবং আরও অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।’ যদিও পরে জানা যায়, মৃতের সংখ্যা আদতে ১২।
তাঁর দেওয়া তথ্য থেকে আরও জানা গিয়েছে, এই হামলার ফলে স্থানীয় মালি খেল চেকপয়েন্টের কাঠামোটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে, সেনাবাহিনীর একাধিক গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইতিমধ্যেই হাফিজ গুল বাহাদুর গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
নাম প্রকাশ্যে না আনার শর্তে অন্য এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে পরপর দু’টি হামলা চালানো হল। এবং দু’টি হামলাই চালানো হয়েছে উত্তর-পশ্চিমের খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশে।
প্রসঙ্গত, সোমবার এই অঞ্চলে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল, তাতে আটজন সেনা সদস্যের প্রাণ যায়। সেইসঙ্গে, ন’জন সন্ত্রাসবাদীকেও নিকেশ করা হয়। ঘটনাটি ওই প্রদেশেরই তিরাহ অঞ্চলে ঘটে। সেই সংঘর্ষ টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলেছিল বলেও জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
সোমবারের সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। যারা পাকিস্তানি তালিবান নামেও সমান কুখ্যাত। তাদের বক্তব্য ছিল, সম্প্রতি তাদের এক যোদ্ধাকে খোঁজার জন্য অভিযান শুরু করে পাক সেনাবাহিনী। সেই পদক্ষেপের যোগ্য জবাব দিতেই নাকি সোমবারের ওই হামলা চালানো হয়!
সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত আরও দাবি করা হয়েছে, সোমবার এবং মঙ্গলবারের হামলার মধ্যেই সাতজন পুলিশকর্মীকে অপহরণ করা হয়। কিন্তু, পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।
সূত্রের দাবি, স্থানীয় একটি জিরগা বা আদিবাসী পরিষদের হস্তক্ষেপে অপহরণকারীরা ওই সাত পুলিশকর্মীকে মুক্তি দিতে রাজি হয়।
এই প্রসঙ্গে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ জিয়াউদ্দিন এএফপি-কে জানান, ‘স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে জঙ্গিদের আলোচনার পরই সাত অপহৃত পুলিশকর্মীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’ যদিও এই বিষয়ে আর কোনও বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি।