আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। রাজধানী ম্যালিনার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামতেই গ্রেফতার হলেন ফিলিপিন্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুতের্তে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করেছে ইন্টারপোল। যদিও এই গ্রেফতারি বেআইনি বলেই দাবি করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির আইনজীবী।
জানা যাচ্ছে, হংকং গিয়েছিলেন রদ্রিগো। আজ মঙ্গলবার ভোরে সেখান থেকে ফিরে আসার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।মূলত অভিযোগ, তাঁর আমলে মাদকবিরোধী অভিযানে প্রচুর হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। মাদক বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের তরফে তাঁকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে রদ্রিগো পুলিশের হেফাজতে আছেন। তিনি সুস্থ আছেন। চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দাভাওয়ের মেয়র থাকাকালীন দুতের্তের আমলে মাদক বিরোধী অভিযানে মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মাদকবিরোধী অভিযানে সেই সময় ৬,০০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি ছিল, যে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি।
গ্রেফতারের আগে সোমবার হংকংয়ে এক সমাবেশে যোগ দেন রদ্রিগো। সেখানে তিনি জানান, তিনি গ্রেফতার হতে প্রস্তুত। তবে তিনি তাঁর মাদক বিরোধী সংক্রান্ত পদক্ষেপকে মানুষের মঙ্গলের জন্যই বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ধরে নিচ্ছি এটা সত্যি, কেন আমি এটা করলাম? তবে আমি নিজের জন্য বা আমার পরিবারের জন্য করিনি। আমি মানুষের জন্য, জাতির জন্য এটা করেছি।’ তিনি আরও দাবি করেন, ফিলিপাইনের নাগরিকদের শান্তি এবং শান্তিপূর্ণ জীবনের জন্য তিনি তাঁর সময়ে সবকিছু করেছি।
উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দাভাওয়ের মেয়র হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তিনি মিন্দানাও দ্বীপের দাভাও শহরের মেয়র পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর মেয়াদের সময় অপরাধ মোকাবেলায় গুলি করে হত্যা করার পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে পরে মামলা শুরু হয়। ২০২১ সালের শেষের দিকে রদ্রিগোর সরকার আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত বন্ধ করার চেষ্টা করে। তবে শেষমেষ আদালত রদ্রিগোকে আটক করার জন্য ইন্টারপোলকে রেড নোটিশ জারি করতে বলে।