ফের একবার বাংলাদেশি প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে তীব্র আক্রমণ ত্রিপুরায় বিজেপির জোটসঙ্গী তিপ্রা মোথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মার। শুক্রবার নিষিদ্ধ বিচ্ছিনতাবাদী সংগঠন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা ছেড়ে আসা সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা করেন প্রদ্যোৎ। সেখানেই তিনি বাংলাদেশ নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইউনুসের মতো কয়েকজন নেতার বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তারা আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে আবারও অস্থিতিশীল করতে চায়। আমাদের নেতাদের এবং ভারত সরকারের উচিত আইএসআই-এর মাধ্যমে সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে চাওয়া এই ব্যক্তিদের থামানো। উত্তরপূর্ব ফের অশান্ত হয়ে উঠলে আমাদের জনগণের কোনও লাভ হবে না। তাই তাদের মূলধারায় মর্যাদার সাথে জীবনযাপন করার জন্য সবকিছু করতে হবে।’
এর আগে বাংলাদেশ ভাগ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছিলেন প্রদ্যোৎ। সেই সময় উত্তপূর্বের এই নেতা দাবি করেছিলেন, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ি মানুষজন ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হাতছাড়া করা ভারতের জন্যে ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রদ্যোৎ। এরই সঙ্গে ইউনুসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রদ্যোৎ মনে করিয়ে দিয়েছিন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরা থেকে খুব একটা দূরে নয়।’ এই আবহে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়েই ভারতকে ‘রাস্তা করে নেওয়ার’ পরামর্শ দেন প্রদ্যোৎ।
উল্লেখ্য, রিপোর্ট অনুযায়ী, চিন সফরে উত্তরপূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি চিনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।’
এই আবহে প্রদ্যোৎ বলেছিলেন, ‘আমাদের আদিবাসীদের সমর্থন করে সমুদ্রে যাওয়ার পথ তরৈর কররা সময় এসেছে ভারতের কাছে। একসময় চট্টগ্রাম শাসন করত এই আদিবাসীরাই। তাই আমরা আর এই অকৃতজ্ঞ শাসনের উপর নির্ভরশীল নই। ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৪৭ সালে বন্দরটি ছেড়ে দেওয়া। সেখানে বসবাসকারী পাহাড়ি জনগণ ভারতের অংশ হতে চাইতেন। জনাব ইউনুস মনে করতে পারেন যে তিনি সমুদ্রের অভিভাবক, কিন্তু বাস্তবতা হল তিনি প্রায় ৮৫ বছর বয়সি একজন স্টপ-গ্যাপ নেতা। ভুলে গেলে চলবে না, তিনি যে বন্দরের কথা বলছেন তা ত্রিপুরা থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।’
এদিকে ইউনুসের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চিকেনস নেক করিডরে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর জোর দিতে বলেছিলেন হিমন্ত। তবে সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রদ্যোৎ বলেন, ‘উদ্ভাবনী এবং চ্যালেঞ্জিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পরিবর্তে আমরা বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলতে পারি এবং সমুদ্রে যাওয়ার জন্যে আমাদের নিজস্ব রাস্তা পেতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বদা আদিবাসী উপজাতিদের বসবাস ছিল। তারা ১৯৪৭ সাল থেকে সর্বদা ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল। সেখানে লক্ষ লক্ষ ত্রিপুরী, গারো, খাসি এবং চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বসবাস করছে। এটি আমাদের জাতীয় স্বার্থ এবং তাদের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করা উচিত।’